চলছে মেলা জমজমাট

Written By Unknown on Friday, January 21, 2011 | 3:29 AM

থ্যপ্রযুক্তির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, প্রযুক্তির মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় দেখে বিষয়টি একেবারেই পরিস্কার হয়ে যায়। ১৩ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিসিএস কম্পিউটার সিটির বার্ষিক মেলা ‘সিটি আইটি ২০১১’ ঘুরেও তা বোঝা যায়।

প্রযুক্তির এই বাজারে সবগুলোই স্থায়ী দোকান।তার পরও মেলার সময় টিকিট কেটে ঢুকছেন দর্শকেরা। দর্শক-ক্রেতার এখন ভিড় পুরো কম্পিউটার সিটি জুড়ে। ‘ডিজিটাল লাইফ, বেটার লাইফ’ স্লোগানকে সামনে রেখে ১০ দিনের এই মেলা চলবে আগামীকালশনিবার পর্যন্ত।
প্রথম দিন থেকেই মেলায় দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়, কিছুক্ষণ পরপরই মূল প্রবেশপথের টিকিট কাউন্টারগুলোর সামনে দর্শনার্থীদের লম্বা সারি। বন্ধুদের সঙ্গে দলবেঁধে বা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে অনেকেই আসছেন এই মেলায়। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন স্কুল থেকেও দলগতভাবে মেলা দেখতে এসেছে অনেক শিক্ষার্থী। সাধারণ মানুষ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন প্রযুক্তি এবং কম্পিউটার সেবা পৌঁছে দেওয়ার কিছু নমুনাও তুলে ধরা হয়েছে এ মেলায়। ফলে মেলায় প্রযুক্তিপণ্য দেখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে জানার সুযোগ পাচ্ছেন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকে এ মেলা। মেলা চলাকালে কম্পিউটার সিটির কোথায় কোন অনুষ্ঠান চলছে তা ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপরই কম ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সবার আগ্রহ নতুন প্রযুক্তিতে
মেলায় দর্শনার্থীদের মধ্যে ল্যাপটপ কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ বেশি। অনেকেই এসেছেন ডেস্কটপ কম্পিউটার বা ডিজিটাল ক্যামেরা কিনতে। কেউ কেউ এসেছেন প্রযুক্তি বাজারের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে। কোন পণ্যে কী কী সুবিধা বা বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে এবং নতুন আসা পণ্যগুলো পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী কি না সে বিষয়গুলোও দর্শনার্থীরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে জেনে নিচ্ছেন।
মেলার প্লাটিনাম পৃষ্ঠপোষক বাংলালায়ন। তারা দর্শকদের জন্য ওয়াইম্যাক্সের মাধ্যমে বিনা মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুযোগ রেখেছে। মেলায় প্রতিদিনই গুণীজন সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছে।সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গেমস প্রতিযোগিতা, ডিজিটাল আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও রক্তদান কর্মসূচি। প্রতিদিনই প্রবেশ টিকিটের ওপর রয়েছে র‌্যাফল ড্র।

নতুন পণ্য, উপহার, ছাড়
এবারের মেলায় বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তিপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্যাভেলিয়ন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ইন্টেল, মাইক্রোসফট, আসুস, বেলকিন, এইচপির ওএমই পার্টনার—এসব ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করছে। ইন্টেল মেলায় তাদের নতুন দুটি প্রসেসর দেখাচ্ছে। দ্বিতীয় প্রজন্মের কোর সিরিজের এই প্রসেসরে গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট উন্নততর করা হয়েছে, ফলে অতিরিক্ত গ্রাফিকস কার্ড ছাড়াই হাই ডেফিনেশন গ্রাফিকসের কাজ করা যাবে। ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে প্রিন্ট করার সুবিধাসহ অল-ইন-ওয়ান প্রিন্টার এনেছে এইচপি।
তারহীনওয়াই-ফাই দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রিন্টারের জন্য নির্ধারিত ঠিকানায় ই-মেইল করেও তা প্রিন্ট করা যাবে। আসুস তাদের সাম্প্রতিকতম ল্যাপটপ প্রদর্শন করছে।অপরদিকে মাইক্রোসফটের ওএমই পার্টনার বাইনারি লজিক লাইসেন্স করা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের সুবিধা দেখাচ্ছে ও ব্যবহারকারীদের এ বিষয়ে সচেতন করছে। এ ছাড়া মেলায় আরও নতুন যে পণ্যগুলো এসেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে এভারমিডিয়ার নতুন একটি ডকুমেন্ট ক্যামেরা, ইমাশনের তারহীন প্রেজেন্টার। মেলা উপলক্ষে ক্যানন ইওএস ৬০ডি নামের একটি পেশাদার মানের ডিজিটাল ক্যামেরা এনেছে এবং অন্যান্য মডেলের ক্যামেরার সঙ্গে বিভিন্ন উপহার দিচ্ছে।
মেলায় প্রায় প্রতিটি দোকানেই বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে বিশেষ ছাড় বা উপহার দেওয়া হচ্ছে। তোশিবা, ডেল, ফুজিৎসু এবং এইচপির কিছু মডেলের সঙ্গে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে ওয়াইম্যাক্স মডেম, পেনড্রাইভ, টি-শার্ট ইত্যাদি। সাধারণ সময়ের থেকে মেলায় বিক্রি বেশি হচ্ছে। মেলায় দর্শনার্থীরা বিভিন্ন প্রযুক্তির পণ্য সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। এতে ল্যাপটপ কেনার প্রতি আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন কম্পিউটার সিটির রায়ানস কম্পিউটার্সের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম।

আয়োজকদের কথা
প্রতিবছরই বিসিএস সিটিতে আইটি মেলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর আয়োজকেরা মেলা শুরুর আগে থেকেই চালিয়েছেন ব্যাপক প্রচারণা। মেলার আহ্বায়ক এ এল মাজহার ইমাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করছি যেন দেশের মানুষ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও প্রয়োজনীয়তা উপস্থাপনের সুযোগ পান। ছোট থেকেই যেন তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে সে জন্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের মেলায় বিনা মূল্যে প্রবেশের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের জন্যও বিনা মূল্যে প্রবেশ এবং তাদের বিশেষভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো নলেজ ম্যানেজমেন্ট জোন তৈরি করা হয়েছে। এ দেশে প্রথম কম্পিউটার কবে এসেছে, কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হলো কবে, দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতিতে কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অবদান রয়েছে এমন বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এখানে।
এর ফলে দর্শনার্থীরা দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির ধারা সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা লাভ করতে পারছেন।’
প্রতিদিন সকাল থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ও বিনোদনমূলক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য। আরও থাকছে জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্বদের নিয়ে বিভিন্ন মনোমুগ্ধকর আয়োজন। র‌্যাফেল ড্রর একজন বিজয়ী রফিকুল ইসলাম সনি ৩২ ইঞ্চি এলসিডি টিভি পেয়েছেন। পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি বলেন, তাঁর এত দিন ধারণা ছিল, এ ধরনের ড্রতে পুরস্কার দেওয়ার কথা বলা হলেও আসলে তা দেওয়া না। তবে বিসিএস কম্পিউটার সিটির এই আয়োজনে তিনি খুবই আনন্দিত হয়েছেন।
মেলার অন্য পৃষ্ঠপোষক হলো স্যামসাং, তোশিবা, ক্যাসপারস্কি ও লাইট-অন। মিডিয়া অংশীদার রেডিও এবিসি, এটিএন বাংলা ও ইত্তেফাক। ম্যাগাজিন পার্টনার কমপিউটার বিচিত্রা।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু