ওদের কষ্টের জীবন

Written By Unknown on Thursday, December 26, 2013 | 7:30 PM

ইরানের বন্দিদশা থেকে মুরাদনগরের ৪ জন বাড়ি ফিরেছে। মুরাদনগর উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের সিএনজি ড্রাইভারের ছেলে রফিকুল ইসলাম। অপর ৩ জন হলো, যাত্রাপুর গ্রামের রমিজ মিয়ার ছেলে আল আমিন, বাইরা গ্রামের হাজী আ. হাসেম মিয়ার ছেলে ওলি উল্লাহ ও পূর্বসোনাউল্লা গ্রামের আবদুল বাতেন মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন।
মঙ্গলবার দুপুরে একদল সাংবাদিক তাদের বাড়িতে গেলে তারা জানান, ইরানে বাংলাদেশী কিছু দালাল চক্রের হাতে বন্দিদশার কথা বলেন। রফিকুল ইসলাম, আল আমিন, জাকির হোসেন ও ওলিউল্লাহ জানান, আমরা সবাই দুবাই ৪-৫ বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের সঙ্গে কাজ করতো মানিক। মানিক ইরানে চলে যায়। সেখান থেকে প্রায়ই আমাদের ফোন করতো। ইরানে প্রতি মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা রোজগার করা যায়। তোরা ইরানে চলে আস। এ কথা আমরা বিশ্বাস করি নাই। মানিক তার স্ত্রী মনির মোবাইল নম্বর দিয়ে বলে আমার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিশ্বাস হলে চলে আসিস ইরানে। আমরা মনির সঙ্গে কথা বলি। মনি বলে, ইরানে ভাল বেতন। তোমরা চলে যাও। মনির কথা মতো শারজা শহরে রনি নামে এক দালালের কাছে ১০০০ দিরহাম জমা দেই জনপ্রতি। রনি শারজার শিয়া মসজিদের পাশে একটি জাহাজে তুলে দিয়। জাহাজ ইরানের বর্ডারের পাশে গেলে একটি স্পিডবোট তুলে দেয়। ওই স্পিডবোট থেকে আমাদের একজন বাঙালি গাড়ির ড্রাইভার বন্দর থেকে আমাদের ইরানের আব্বাস জেলার বাবা গোলাম নামক একটি গ্রামের ৪ রুমবিশিষ্ট বাড়িতে নিয়ে আটকে রাখে। ১টি রুম গাড়ি রাখার, ১টি টর্চার সেল, ১টি আমাদের থাকার রুম, অপরটি দালালদের থাকার রুম। আমাদের রুমে অর্ধশতাধিক লোক ছিল। সবাই বাংলাদেশী। ওই টর্চার সেলে প্রায়ই আমাদের মারধর করতো বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য। যে টাকা এসে দিতো তাকে মাঝেমধ্যে ইরানের বাসায় কাজ করতে পাঠাতো। যে টাকা দিতে পারতো না তাকে ওই টর্চার সেলে বলাৎকার করাতো। ৭ মাস পর অনেক কৌশল করে পালিয়ে এসেছি। আসার সময় তারা যাদের কাছ থেকে বিকাশ-টাকা নিতো সেই হিসাবের বই নিয়ে এসেছি। সে হিসাব মতে, প্রায় ৩ কোটি টাকা দালালরা কাজের নাম করে শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়েছে। এর মধ্যে আমরা ২৯ জন পালিয়ে এসেছি। বাকিরা এখনও ওখানে বন্দি অবস্থায় রয়েছে। আমাদের কোন কাজ করতে দিতো না। দু’বেলা শুধু বাঁধাকপি সিদ্ধ করে খেতে দিতো। তারা আগেই একটি লিস্ট দিতো। বাড়িতে কিভাবে কথা বলতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে মারধর করতো। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিকাশ-এর নম্বরগুলো যাচাই-বাছাই করে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানা ট্যাংগারচাল গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে রবিউল হোসেন মানিক, জামাল ইরানে রয়েছে। এর পর সিআইডি পুলিশ পাপন কম্পিউটার স্টোরের মালিক ফরিদ, মানিকের পিতা মো. শাহজাহান ও স্ত্রী মনি এবং জামালের স্ত্রী আঁখি আক্তারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা সিআইডি সদর দপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসে। তাদের স্বীকারোক্তি, প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা মানুষের কাছে থেকে তারা হাতিয়ে নিয়েছে। দালালরা হলো বাংলাদেশের চাঁদপুর জেলার মানিক, সিলেটের কাশেম, কাদের মোল্লা, জামাল, নারায়ণগঞ্জের জিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চান মিয়া।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু