Home » , , , , » উচ্চ আদালতের রায়ের অবমাননা বন্ধ হোক- পুলিশি রিমান্ড

উচ্চ আদালতের রায়ের অবমাননা বন্ধ হোক- পুলিশি রিমান্ড

Written By Unknown on Saturday, January 11, 2014 | 7:56 AM

রিমান্ড প্রশ্নে যেসব কাণ্ড চলছে, তার স্থায়ী বিহিত হওয়া দরকার। উচ্চ আদালতের রায়ের বাইরে যাওয়া যাবে না—এমন যুক্তি ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকেরা প্রায় প্রবাদ বাক্যে পরিণত করেছেন।
অথচ রিমান্ড-সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশনা বিএনপি সরকারের মতোই অগ্রাহ্য করে চলেছে তারা। অন্যদিকে রিমান্ড প্রশ্নে সাম্প্রতিক কালে হাইকোর্ট থেকে বিচ্ছিন্নভাবে যে ধরনের প্রতিকার মিলছে, তাতে আইনের বৈষম্যমূলক প্রয়োগই প্রতিভাত হচ্ছে। রমনা থানায় পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেওয়ায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির দুই নেতাকে নিম্ন আদালত দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন। এর একজন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, অন্যজন সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন। এখন হাইকোর্ট থেকে শুধু রিমান্ড আদেশ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের সাত দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এর আগেও বিএনপির একজন আইনজীবী নেতা অনুরূপ প্রতিকার পেয়েছেন।

রিমান্ড প্রশ্নে আইন বা উচ্চ আদালতের আদেশে কোনো আলাদা বিধান নেই। ভিআইপি ও চিহ্নিত অপরাধীর মধ্যে কোনো ফারাক সৃষ্টি করা হয়নি। বস্তুত প্রচলিত আইনের কোথাও রিমান্ড শব্দটিই নেই। অপ্রিয় হলেও সত্য, এটা আইন ও সংবিধানের চেতনাবিরুদ্ধ একটি অনুশীলন। সংবিধান বলেছে, কারও ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা আদায় করা যাবে না। সরকার থেকে রিমান্ডের আবেদন করে এবং নিম্ন আদালত থেকে তা মঞ্জুর করার মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে সংবিধানের ওই চেতনার ব্যত্যয় ঘটে চলেছে।
তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ কিংবা দুর্ধর্ষ আসামির ক্ষেত্রে প্রলম্বিত জিজ্ঞাসাবাদ বিশ্বের সব ফৌজদারি অপরাধ বিচারব্যবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে রিমান্ড মানেই বিভীষিকা। প্রতিপক্ষ দমনে বিএনপি সরকারও এটা ব্যবহার করেছিল বলে তারা উচ্চ আদালতের সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি। ২০০৩ সালে বিচারপতি মো. হামিদুল হক ও বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ৫৪ ধারায় পুলিশের পাইকারি গ্রেপ্তার এবং তাদের আবেদনক্রমে আদালতের রিমান্ড মঞ্জুরের বিরুদ্ধে একটি বিস্তারিত নির্দেশনা জারি করেন। পুলিশ আচরণ বদলায়নি। প্রশ্ন হচ্ছে, বিচার বিভাগ কি বদলেছে? সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের রায় নিম্ন আদালতের জন্য অবশ্যপালনীয়।
২০০৩ সালের পর দুই দলের সরকারের মধ্যে একটি মৌলিক পার্থক্য ঘটেছে। সেটি হলো, এক-এগারোর কারণে বিচার বিভাগ পৃথক হয়েছে। অধস্তন আদালত দাবি করে থাকেন, তাঁরা আগের চেয়ে স্বাধীন। কিন্তু রাজনৈতিক মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের দুটি স্বভাবগত আচরণ আমরা দেখি—ওপরের হুকুমে মামলা দায়ের এবং জামিনের বিরোধিতাপূর্বক রিমান্ডের আবেদন। দুটোই অবশ্য আদালতের স্বাধীনতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
আদালতের নির্দেশনা মেনে আইনে উপযুক্ত সংশোধনী আনা হোক। ডিবি পুলিশের হাজতখানা বন্ধ হোক। অনতিবিলম্বে রায় মেনে কারাগারে পৃথক কক্ষ স্থাপন এবং সেখানে অভিযুক্তের আইনজীবী ও আত্মীয়ের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের প্রথা চালু হোক। উচ্চ আদালতের রায়ের অবমাননা বন্ধ হোক।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু