চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৪ শতাংশ

Wednesday, January 26, 2011

বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা এখন আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তবে ইউরোপের দেশগুলোয় অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ায় ঝুঁকি রয়েই গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গতকাল তাদের নতুন পূর্বাভাসে এ আশঙ্কাই ব্যক্ত করেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে সংস্থাটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এক বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। আইএমএফের পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশগুলোর বর্তমান অবস্থা সন্তোষজনক। কিন্তু উন্নত দেশগুলোয় কর্মসংস্থানহীনতার উচ্চ হার এবং ইউরোপীয় অঞ্চলের অর্থ সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি এখনো আশঙ্কামুক্ত নয়।
প্রতিবেদনে আইএমএফ জানায়, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে ৪.৪ শতাংশ। এর আগে সংস্থাটি গত বছরের অক্টোবরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৪.২ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া অর্থ সংস্কারের নতুন পদক্ষেপ চলতি বছরের দ্বিতীয় অর্ধে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি আরো বাড়িয়ে দেবে বলে আইএমএফ মনে করছে।
প্রতিবেদনে আইএমএফ পূর্বাভাস দেয়, ২০১১ ও ১২ সালে উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশ করে হবে। এতে চলতি বছর ও আগামী বছরে যুক্তরাষ্ট্রে যথাক্রমে ৩ ও ২.৭ শতাংশ, জাপানে ১.৬ ও ১.৮ শতাংশ, ইউরো অঞ্চলে ১.৫ ও ১.৭ শতাংশ, জার্মানিতে ২.২ ও ২ শতাংশ, ইতালিতে ১ ও ১.৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
অন্যদিকে আইএমএফের নতুন পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্ধনশীল ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি উভয় বছরেই ৬.৫ শতাংশ করে হবে। ২০১১ ও ২০১২ উভয় বছরেই এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি হবে যথাক্রমে ৮.৪ শতাংশ করে। আর এ দুই বছরে লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৪.৩ শতাংশ ও ৪.১ শতাংশ হারে এবং মধ্য ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ৩.৬ শতাংশ ও ৪ শতাংশ হারে হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
পূর্বাভাস প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১০ ও '১২ সালে প্রবৃদ্ধির দিক থেকে উন্নয়নশীল এশিয়ার দেশ ভারত ও চীনের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হবে। এর মধ্যে ভারতের প্রবৃদ্ধি যতাক্রমে ৮.৪ ও ৮ শতাংশ হারে এবং চীনের প্রবৃদ্ধি ৯.৬ ও ৯.৫ শতাংশ হারে হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
এ ছাড়া প্রতিবেদনে আইএমএফ জানায়, চলতি বছরেও বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ধারা অব্যাহত থাকবে। এ সময় আবহাওয়াজনিত কারণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দ্রব্যের সরবরাহ কমে যাওয়ার ফলে মূল্যজনিত 'ধাক্কা' খেতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি। আর তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলারের কাছাকাছি হতে পারে।
এর আগে গত বছরে অক্টোবরে আইএমএফ চলতি বছর ব্যারেলপ্রতি তেলের মূল্য ৭৯ ডলার করে হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল। এএফপি।

কোকোর দুর্নীতি জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের হ্যান্ডবুকে

Sunday, January 23, 2011

জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের একটি যৌথ প্রকাশনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কয়েক লাখ ডলার আত্মসাতের প্রসঙ্গ স্থান পেয়েছে।

জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দপ্তর (ইউএনওডিসি) এবং বিশ্বব্যাংকের সমন্বিত উদ্যোগ-স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি ইনিশিয়েটিভের প্রস্তুত করা একটি পুস্তিকায় সিমেন্স কম্পানির কাছ থেকে কোকোর ঘুষ গ্রহণের অভিযোগকে 'জাতীয় মুদ্রা সরানোর' উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
'অ্যাসেট রিকভারি হ্যান্ডবুক_এ গাইড ফর প্র্যাকটিশনার্স' নামের পুস্তিকাটি গত ১৬ ডিসেম্বর ভিয়েনায় প্রকাশ করা হয়। ২৭০ পৃষ্ঠার পুস্তিকায় বলা হয়েছে_ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলো প্রতিবছর দুই হাজার থেকে চার হাজার কোটি ডলারের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে গত ১৫ বছরে মাত্র ৫০০ কোটি ডলার উদ্ধার করে ক্ষতিগ্রস্ত দেশে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে। বেহাত হওয়া অর্থ উদ্ধার প্রচেষ্টা জোরদার করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ওই পুস্তিকায়।
পুস্তিকার ৩৬ ও ১৭৯ পৃষ্ঠায় বাংলাদেশে সিমেন্স কম্পানির সঙ্গে আরাফাত রহমান কোকোর অনৈতিক আর্থিক যোগসাজশের প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। ৩৬ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান করে দেখেছে, সিমেন্স বিভিন্ন দেশে সরকারি কাজ পেতে জনপ্রশাসন কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে কনসালট্যান্টদের ঘুষ দেওয়া হতো। কনসালট্যান্টরা এর বিনিময়ে সরকারি কর্মকর্তা ও সিমেন্স কর্তৃপক্ষের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেছেন। আর্জেন্টিনা, বাংলাদেশ ও ভেনিজুয়েলায় এ ধরনের ব্যাপক দুর্নীতির দায়ে সিমেন্সকে শেষ পর্যন্ত ৪৫ কোটি ডলার জরিমানা করা হয়।
পুস্তিকার ১৭৯ পৃষ্ঠায় বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে ঘুষ হিসেবে বিদেশি একটি কম্পানির দেওয়া অর্থ ২০০৯ সালে বাজেয়াপ্ত করার পদক্ষেপ নেয় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের যুক্তি ছিল, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আমেরিকান মুদ্রার বিনিময় কাজটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থরক্ষাকারী ব্যাংকের মাধ্যমেই হতে পারে। ঘুষ দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি (সিমেন্স) বিদেশি হলেও সেটি নিউইয়র্ক স্টক এঙ্েেচঞ্জে নিবন্ধিত, আর তাই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের আইনের ঊধর্ে্ব নয়।
এর আগে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ২০০৯ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ ৩০ লাখ ডলার পুনরুদ্ধারের জন্য আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছে। কোকো এই অর্থ জার্মানির প্রতিষ্ঠান সিমেন্সের কাছ থেকে গ্রহণ করে সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি ব্যাংকে জমা রাখেন।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত গত ৩০ নভেম্বর কোকো ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী আকবর হোসেনের ছেলে ইসমাইল হোসেন সাইমনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন। এর কয়েক দিনের মধ্যেই পুস্তিকাটি প্রকাশিত হলো। কোকো ও সাইমনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৭২ ডলার ও সিঙ্গাপুরে ২৮ লাখ ৮৪ হাজার ৬০৪ ডলার পাচারের অভিযোগ এনে দুর্নীতি দমন কমিশন (এসিসি) গত বছরের ১৭ মার্চ কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে।
প্রসঙ্গত, চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে আরাফাত রহমান কোকো এখন থাইল্যান্ডে আছেন।

আগামী দুই বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকবে : বিশ্বব্যাংক

Friday, January 14, 2011

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সম্ভাবনাসংক্রান্ত বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, আগামী দুই বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকবে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে গতকাল প্রকাশিত 'গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০১১ : নেভিগেটিং স্ট্রং কারেন্টস' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ ও ২০১২ সালে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে মন্থর হবে। তবে একই সময়ে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারে ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে বলে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি ৩.৯ শতাংশ বাড়লেও ২০১১ সালে ৩.৩ শতাংশ এবং ২০১২ সালে ২.৩ শতাংশে নেমে আসবে। তবে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত বছরের ৫.৮ শতাংশ থেকে ৬.১ শতাংশে এবং ২০১২ সালে ৬.৩ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে।
রিপোর্টে বলা হয়, ২০১১ সালে ভারতের অর্থনীতি ৮.৭ শতাংশে এবং ২০১২ সালে ৯.৫ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অর্থনীতি গত বছরের ৪.৪ প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক হ্রাস পেয়ে ২.৬ শতাংশে নেমে আসবে। তবে ২০১২ সালে দেশটির অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৮ শতাংশে দাঁড়াবে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি ঘাটতি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলো এমনকি ভারতের চেয়েও ভালো করবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারি ঘাটতি ব্যবস্থাপনায় ভালো করছে, যা প্রায় ২.৫ শতাংশ। এ হার মালদ্বীপ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ভুটানের তুলনায় কম। তবে প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ সংকটকে দেশের অধিকতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয় যে এটি দেশের অর্থনীতির কাঙ্ক্ষিত বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখতে পারে।
 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু