Home » , » হারিয়ে যাচ্ছে নৌপথ by অরূপ দত্ত

হারিয়ে যাচ্ছে নৌপথ by অরূপ দত্ত

Written By Unknown on Sunday, September 18, 2011 | 5:17 AM

৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল। সেই নৌপথ কমতে কমতে এখন প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটারে নেমেছে। শুকনো মৌসুমে আরও কমে হয় তিন হাজার ৮০০ কিলোমিটার। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নদী সংরক্ষণ বিভাগ এই হিসাব দিয়েছে।
১৯৬৫ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত নেদারল্যান্ডের নদী বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় জরিপ করে তৈরি করা ‘নেডেকো রিপোর্ট’ এবং ১৯৭৫ সালে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রকাশিত নদীর দূরত্ববিষয়ক প্রতিবেদন থেকে দেশে ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
পলি ও বালু পড়ে নদীর নাব্যতা কমে যাওয়া এবং দখল ও দূষণের কারণে প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার নদীপথ বন্ধ বা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক স্থানে নদীতে পানির গভীরতা নেমে এসেছে তিন ফুটেরও নিচে।
বর্তমানে নাব্যতার সংকট এতটাই তীব্র যে মাঝেমধ্যেই ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া চ্যানেলে অন্তত পাঁচটি ফেরি বেশ কয়েকবারে প্রায় আড়াই শ ঘণ্টা ডুবোচরে আটকে ছিল। অসংখ্য ডুবোচরের ফাঁক দিয়ে কোনোমতে ফেরি চলছে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে খননকাজে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়। ওই সময় শুকনো মৌসুমে নদীপথ কমতে থাকে বেশি হারে। তখন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া-গোদাগাড়ী চ্যানেলে পদ্মা, দৈ-খাওয়ায় যমুনা; ছাতক ও লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ঘাটে মেঘনায় ৩৬ লাখ ঘনমিটার নদী খননকাজের নামে ৪৬ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই অভিযোগের তদন্ত করছে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে খননকাজের জন্য ২৪ হাজার কোটি টাকার পরিকল্পনা নিলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বলা হচ্ছে, খননকাজে ১২৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। অথচ বিআইডব্লিউটিএ সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে ৪০৭ কিলোমিটার নৌপথ এবং ১২টি ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে এখন অন্তত ৫০টি ড্রেজার বা খননযন্ত্র প্রয়োজন। আছে মাত্র ১০টি। ভাড়া করা হচ্ছে ১৫টি।
প্রথম শ্রেণীর নদীপথ মাত্র ৬৮৩ কিলোমিটার: বর্তমানে দেশে পাঁচ হাজার ৯৯৫ কিলোমিটার নৌপথের মধ্যে ১২-১৩ ফুট গভীরতার প্রথম শ্রেণীর নৌপথ আছে মাত্র ৬৮৩ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম-ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ-ভৈরব, আশুগঞ্জ, বরিশাল-মংলা ও খুলনায় সংযোগকারী নৌপথগুলো এই শ্রেণীভুক্ত। সাত-আট ফুট গভীরতার দ্বিতীয় শ্রেণীর নৌপথ আছে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার। পাঁচ-ছয় ফুট গভীরতার তৃতীয় শ্রেণীর নৌপথ আছে এক হাজার ৮৮৫ কিলোমিটার। পাঁচ ফুটের নিচে বাকি নৌপথ নৌযান চলাচলের অযোগ্য।
এখন প্রায়ই ফেরি আটকে যাচ্ছে: ১০ সেপ্টেম্বর সকাল সাতটা থেকে দৌলতদিয়া ঘাটের কাছে নৌযান চলাচলকারী চ্যানেলে একে একে সাতটি ফেরি আটকা পড়ে। এতে মানিকগঞ্জ-পাটুরিয়া হয়ে রাজধানীর সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগ নয় ঘণ্টা বন্ধ থাকে। পদ্মা ও যমুনা নদীর সংযোগস্থল বরাবর দুই তীরে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে কয়েক শ যাত্রীবাহী যানবাহন আটকা পড়ে।
বিআইডব্লিউটিএর স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেন যে সেখানে চ্যানেলের প্রশস্ততা ও নাব্যতা কম। খননকাজের জন্য চ্যানেলে খননযন্ত্র স্থাপন করা হলে ফেরি চলাচল বিঘ্নিত হয়। এসব কারণে খননকাজ বন্ধ রাখতে হয়।
ওই দিন ভোর চারটার দিকে যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে ফেরি কেরামত আলী পাটুরিয়ার উদ্দেশে দৌলতদিয়া ঘাট ছাড়ার পর চ্যানেলের মুখে আটকা পড়ে। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ায় যাওয়ার পথে একই স্থানে আটকা পড়ে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান। প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা করে সংস্থার উদ্ধারকারী জাহাজ আইটি-৩৯৮-এর সাহায্যে সকাল সাড়ে আটটার দিকে ঘাটে ফিরিয়ে আনা হয় কেরামত আলীকে। আটকে পড়া হামিদুর রহমানকে উদ্ধার করা হয় সকাল ১০টায়। এরপর পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া ফেরি শাহ মখদুম, শাহ আলী, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, আমানত শাহ ও হামিদুর রহমান দৌলতদিয়া চ্যানেলের মুখে পর্যায়ক্রমে আটকা পড়ে। এসব ফেরিতে আটকা পড়ে প্রায় ১০০ যানবাহন আর বিপুলসংখ্যক যাত্রী।
১১ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে মাত্র আটটি যানবাহন নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই ফেরি খানজাহান আলী চরে আটকে যায়। কিছুক্ষণ পর আটকে পড়ে শাহ মখদুমসহ আরও দুটি ফেরি। আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে ফেরির মাস্টাররা দুটি ফেরি নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে ভিড়তে সক্ষম হলেও ফেরি খানজাহান আলী আটকে থাকে। পরে বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘আশা’ দুপুর একটার দিকে ফেরিটি উদ্ধার করে। রাত ১২টার দিকে ছোট ফেরি কুমারী দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ডুবোচরে আটকা পড়ে।
১২ সেপ্টেম্বর মাওয়া-কাওরাকান্দি ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে নাব্যতার সংকট তীব্র হয়ে ওঠে। দুটি ফেরিপথে ধারণক্ষমতার কম যানবাহন নিয়েও ডুবোচরে একের পর এক ফেরি আটকে যায়। মাওয়া-কাওরাকান্দি ফেরিপথে নাওডোবা-হাজরা-মাগুখণ্ড সরু চ্যানেল দিয়ে ধারণক্ষমতার অনেক কম যান নিয়ে চলতে হয় ফেরি। এ সময় শুধু যাত্রীবাহী যান ও কাঁচামালবাহী ট্রাকই চলাচল করছিল। পণ্যবাহী ট্রাককে পারাপারের জন্য তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হয়। এই পরিস্থিতিতে টাস্কফোর্স গঠন করা হলেও অবস্থার তেমন পরিবর্তন হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, গত মাসে কিছু সমস্যা হলেও এখন নৌপথে ফেরি চলাচল অনেকটা ভালো অবস্থায় এসেছে। নাব্যতা সংকট কমাতে নিরন্তর চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় যথেষ্ট সতর্ক রয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রকল্পও বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান তিনি।
দুই বছরে ৪০৭ কিলোমিটার নৌপথ বন্ধ: বিআইডব্লিউটিএর নদী সংরক্ষণ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত দুই বছরে পানির গভীরতা পাঁচ ফুটের নিচে নেমে আসায় ৪০৭ কিলোমিটার নদীপথ বন্ধ হয়ে গেছে। এগুলো হচ্ছে কিশোরগঞ্জের পাগলামোড়-মোহনগঞ্জে কংস নদে ৪৩ কিলোমিটার, খুলনা-কালিকাপুর রুটে মধুমতী নদীতে ১৩৮, কালিকাপুর-মাদারীপুর-নন্দীপাড়ায় মধুমতী নদীতে ৫৬, যশোরে কপোতাক্ষ-টেপাখালীতে ৮৫ এবং পাইকগাছা-আশাশুনি-প্রতাপনগরে ৮৫ কিলোমিটার নৌপথ।
বন্ধ ১২টি ঘাট: নাব্যতা সংকটের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২টি ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে— গোয়ালন্দঘাট, ভাগ্যকুল, জসিলদিয়া, গৌরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, সরিষাবাড়ী, গোদাগাড়ী, রাজশাহী, মিরকুটিয়া, পাকশী, জগন্নাথগঞ্জ ও ফুলছড়ি বন্দর।
বিআইডব্লিউটিএর দাবি: বিআইডব্লিউটিএ দাবি করেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৪১ কিলোমিটার নৌপথের উন্নয়ন করে প্রথম শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে কালীগঞ্জ-হিজলায় ২৫ কিলোমিটার এবং সদরঘাট-মিরপুর সেতু পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর ১৬ কিলোমিটার পথ রয়েছে। এ ছাড়া মিরপুর থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এবং সাহেবের হাট নালার ১২ কিলোমিটার অংশকে খনন করে উন্নয়ন করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই উন্নয়ন চোখে পড়ে না। সদরঘাট থেকে আশুলিয়া পর্যন্ত বৃত্তাকার নৌপথের প্রথম ভাগে নাব্যতার অভাবে বড় নৌযান চলতে পারছে না, যে কারণে বর্তমান সরকারের বহুল প্রচারিত ‘ওয়াটার বাস’ চলাচল প্রায় বন্ধ করতে হয়েছে।
খননে অতি খরচ: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর খননযন্ত্র ভাড়া নেওয়া, কর্মপরিকল্পনা, খননযন্ত্রের খুচরা যন্ত্রাংশ সংগ্রহ ইত্যাদি কাজে মোট ১২৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে জানা যায়। ২০০৮-০৯ সালে খরচ হয়েছে ৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা আর গত অর্থবছরে ৪৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এসবের সুফল তেমন পাওয়া যায়নি। চলতি অর্থবছরের জন্য খননকাজে বাইরের খননযন্ত্র ভাড়ার জন্য ৩৭ কোটিসহ মোট বাজেট রাখা হয়েছে ৭১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এদিকে যে খননযন্ত্রগুলো আছে, সেগুলোও সময়মতো কাজে লাগানো হয় না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেমন, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় নদী খননের জন্য বিআইডব্লিউটিএর পাঁচটি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি খননযন্ত্র পাঠানো হলেও ব্যবহার করা হয়নি। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর ব্যাখ্যা হচ্ছে, স্রোতের গতি দুই নটিক্যালের বেশি থাকলে খননকাজ করা যায় না। কিন্তু বর্তমানে সেখানে স্রোতের গতি সাড়ে চার নটিক্যাল হলেও খননকাজ করা হচ্ছে। এ অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া আটটায় দৌলতদিয়ায় শাহ আলী নামের একটি ফেরি সেখানে আটকে যায়।
এ ছাড়া গত বছর বেশি স্রোত থাকা সত্ত্বেও বিআইডব্লিউটিএ মাওয়ায় হাজরা শোলে দুই কোটি টাকা খরচ করে খননকাজ করেছিল। বিআইডব্লিউটিএ দাবি করেছে, ওই কাজ একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর আগ্রহে করা হয়েছিল। কিন্তু মাওয়ায় পদ্মা নদীতে, ঢাকায় বুড়িগঙ্গায় ও আরিচায় খননকাজ করার পর নাব্যতা প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। আংশিক খননকাজ করে পুরো বিল তুলে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। চলতি অর্থবছরের জন্য শুধু খননকাজে ৩৭ কোটি টাকা বাজেট রাখা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘ সময়জুড়ে দেশের নদ-নদীকে অবহেলা করে একরকম হত্যাই করা হয়েছে। ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদ শুকিয়ে গেছে। বাগেরহাটের রামপালে নদীর এমন অবস্থা হয়েছে যে এখন উন্নয়নও করা যাচ্ছে না। আড়িয়াল খাঁ নদের নাব্যতা ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। অল্প সামর্থ্যের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএকে কাজ করতে হচ্ছে। তার পরও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়াসহ যেসব চ্যানেলে এই মুহূর্তে সমস্যা হচ্ছে, সেগুলোতে বিআইডব্লিউটিএর খননকাজ অব্যাহত রয়েছে।
নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে বিআইডব্লিউটিএ কোনো মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে কি না—এ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ৫৩টি নদীর উন্নয়নে ১১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকার প্রকল্প উপস্থাপনের পর ২৪টির বিষয়ে আশ্বাস পেয়েছে। সে ক্ষেত্রে খরচ হবে পাঁচ হাজার ২৭২ কোটি টাকা।
নাব্যতার অভাবে বন্ধ নৌপথ
১৯৭৬ সালের দিকে বিভিন্ন নদীর নাব্যতা কমতে শুরু করে। ১৯৭৭ সালের মধ্যে ২১৬ মাইল নৌপথ বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয় আরও ২১ কিলোমিটার। কুতুবদিয়া ও মহেশখালী হয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ইনার চ্যানেলে পানির গভীরতা ছিল ছয় ফুট। ১৯৮৪ সাল থেকে এই রুটে গভীরতা দু-তিন ফুটে নেমে একরকম বন্ধই হয়ে যায়। ১৯৯৯ সালে মেঘনা নদীর উত্তর দিকে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতিতে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-বরিশালে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রুট বন্ধ হয়ে যায়, যা আর চালু হয়নি। কক্সবাজার রুটে বাঁকখালী নদীর নাব্যতা কমতে কমতে এখন ১০ কিলোমিটার অংশ শুকিয়ে গেছে। সিরাজগঞ্জ থেকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী পর্যন্ত নৌপথটি শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আরিচা-নগরবাড়ী রুটটি ১৯৯৫ সালে নাব্যতা কমে শুকিয়ে গেলে পাঁচটি স্থানে ঘাট পরিবর্তন করতে হয়।
বিআইডব্লিউটিএর নদী সংরক্ষণ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, মধুমতী নদী ও আড়িয়াল খাঁ নদের নাব্যতা ভয়াবহভাবে কমে গেছে। আরিচা-রাজশাহী-গোদাগাড়ীতে পদ্মা নদীর নাব্যতাও অর্ধেকের মতো কমে গেছে।
এ ছাড়া বর্তমানে মোহনগঞ্জ-ঠাকুরকোনায় কংস নদের ৪৬ কিলোমিটার অংশ বন্ধ আছে। বড়দিয়া-তালবাড়িয়ায় গড়াই ও মধুমতী নদীর ১৭০ কিলোমিটার, বাঘাবাড়ী-বাদলগাছিতে হুরাসাগর ও বড়াল নদের ১৬৩, বাঘাবাড়ী-উল্লাপাড়ায় করতোয়া নদীর ৩২, সৈয়দপুর-শ্রীনগরে ইছামতী নদীর ১৮, ভৈরববাজার-হোসেনপুর-ময়মনসিংহ-বাহাদুরাবাদে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ২৪০, আরিচা-পাকশী-রাজশাহী-গোদাগাড়ী-ভোলাহাটে ৩০৭ কিলোমিটার নৌপথ বন্ধ। আরও অনেক স্থানে স্থানীয় নদীগুলোর শত শত কিলোমিটার অংশ বন্ধ হয়ে গেছে। যেমন নরসিংদী-কটিয়াদীতে ৮৪, বৈঠাবাড়িয়া-গাজীপুরে ৯, ছাতক-আটগ্রামে ১৪১, সাভার-নয়ারহাট-ধামরাইয়ে ১০, রোস্তমপুর-কালিয়াকৈরে ১০, মনুমুখ-মৌলভীবাজারে ২০ এবং ইচলী-ফরিদগঞ্জ-চরপাগলায় ৯৩ কিলোমিটার নদীপথ বন্ধ আছে।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু