এক সময় সংবাদ মাধ্যমের শিরোনাম দখল করেছিল ইরাকের রামাদি, নাজাফ, সামারা ও বাগদাদ। বর্তমানে সে স্থানে উঠে এসেছে পাকিস্তানের লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার ও ইসলামাবাদ। কারণ প্রতিদিনই এসব শহর ছাড়াও দেশটির বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্প্রতি সীমান্তবতর্ী উপজাতি অধু্যষিত এলাকায় অভিযান শুরু করেছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে তালেবান ও পাঞ্জাবী জঙ্গিদের রয়েছে যোগসূত্র।
তাদের ধারণা আফগান সীমান্তে এক সময় যে জঙ্গিবাদের সূচনা তা এখন আর সেখানে সীমাবদ্ধ নেই। জড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। বস্তুত সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, চিরশত্রু ভারত নয়, পাকিস্তানের জন্য হুমকি সেদেশের সন্ত্রাসী চক্র। তাই পাকিস্তানিদের সর্বাগ্রে সন্ত্রাস তথা জঙ্গিদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ভারত সীমান্তের দিকেই দৃষ্টি নিবন্ধ রেখেছে। অবশ্য তার কারণও যে নেই তা নয়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত ও পাকিস্তান তিন তিনটি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। তার মধ্যে দুইবারের যুদ্ধ কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে, যা পাকিস্তানিদের মনে আজো দাগ কেটে আছে। বিশেষ করে সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় বেশিরভাগ পাকিস্তানি সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন। তাদের ভাষায়, ঐসব যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানকে কেবলই দাবার গুটি হিসাবে ব্যবহার করেছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র যে মুহূর্তে পাকিস্তানের সন্ত্রাস নিমর্ূলের জন্য মরিয়া ঠিক সে মুহূর্তে পাকিস্তানিদের অনেকেই আফগান যুদ্ধ ও নিজ দেশের সন্ত্রাস বিরোধী লড়াইকে দেখছে সে ফ মার্কিন সংগ্রাম হিসাবে সেটা যে তাদেরও লড়াই-সংগ্রাম তা মানতে রাজি নয় তারা। বরং আফগানিস্তানে ভারতের কনসু্যলেট অফিস খোলার বিষয়কে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা দেখছে অবিশ্বাসের চোখে, তাদের ধারণা, আফগানিস্তানে প্রভাব খাটানোর লক্ষ্যেই ভারত কাজটি করেছে। তাদের বোঝা উচিত সময় পরিবর্তন হয়েছে। এক সময় ভারত যদিও পাকিস্তানকে বিভক্ত করার কাজে সহযোগিতা করেছে, এখন আর তেমনটি চায় না। বরং পাকিস্তানে নৈরাজ্য সৃষ্টির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি চিন্তিত ভারতও। বিশেষ করে মুম্বাইয়ের হোটেলে ও কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে বোমা হামলার ঘটনায় ভারত সন্ত্রাস নিমর্ূলে আরো বেশি জোরালো ভূমিকা পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। তাই পুরনো দিনের অনাস্থা-অবিশ্বাস ভুলে পাকিস্তান ও ভারতের উচিত সন্ত্রাস নির্মূলে একাট্টা হয়ে কাজ করা। এক্ষেত্রে আরো একটি বিষয় মনে রাখা দরকার-আফগানিস্তানের চেয়ে পাকিস্তানের গুরুত্ব বেশী। যুক্তরাষ্ট্র যদি ভারত ও পাকিস্তানকে তার আস্থাভাজন মিত্র বহাল রাখতে চায় তাহলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে পারে, একথাও মনে রাখতে হবে, কাজটি মোটেই সহজ নয়। কারণ কথিত ইসলামী জঙ্গীরাই এক্ষেত্রে প্রথম প্রতিবন্ধক, যা ভারত ও পাকিস্তানি নাগরিক কারোরই হালকা হিসাবে নেয়ার অবকাশ নেই।
বিদেশের কলাম : পাক-ভারত সম্পর্ক : একটি পর্যালোচনা নাথানিয়েন গ্রোনেউড
Written By Unknown on Thursday, December 2, 2010 | 4:08 AM
Related Articles
If you enjoyed this article just Click here Read Dhumketo ধূমকেতু, or subscribe to receive more great content just like it.
0 comments:
Post a Comment