Home » , » সেনাবাহিনীকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার তাগিদ : ফখরুলের কুশল জানলেও সংলাপের বিষয়ে কিছুই বললেন না প্রধানমন্ত্রী

সেনাবাহিনীকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার তাগিদ : ফখরুলের কুশল জানলেও সংলাপের বিষয়ে কিছুই বললেন না প্রধানমন্ত্রী

Written By Unknown on Friday, November 22, 2013 | 7:17 AM

রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আরেকটি প্রত্যাশারও অপমৃত্যু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান বিরোধী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সঙ্গে কথা বললেও বহুকাঙ্ক্ষিত সংলাপ নিয়ে কিছুই বলেননি। কুশল বিনিময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেন তিনি।
যদিও সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব পর্যায়ে সংলাপ শুরু করতে বলেছেন। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকে এ ধরনের তথ্য দেন।

গতকাল সশস্ত্রবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে মির্জা আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী তার সঙ্গে শুধু কুশল বিনিময় করেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি কেমন আছি এবং ম্যাডাম কেমন আছেন—এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। তবে সংলাপের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনো কথা হয়নি।
সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে বিএনপির পক্ষ থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমানসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা যোগ দেন। বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি যোগ দিতে পারেননি বলে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে সশস্ত্রবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে সেনাকুঞ্জে দেখা হয় দুই নেত্রীর। ওই সময় কুশল বিনিময়ও হয় তাদের মধ্যে।
সশস্ত্রবাহিনী দিবসের এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতা তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ঢাকা সেনানিবাসের সশস্ত্রবাহিনী বিভাগে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সাবেক প্রেসিডেন্টগণ, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিগণ, সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিগণ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারগণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতগণ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা যোগ দেন।
উল্লেখ্য, গত বছর সশস্ত্রবাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। তবে একই অনুষ্ঠানে দুই নেত্রী যোগ দিলেও তাদের মধ্যে কোনো কথাবার্তা কিংবা কুশল বিনিময় হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
সেনাকুঞ্জে সশস্ত্রবাহিনী দিবস উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শুধু দেশে নয়, শান্তি মিশনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘেরও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনী তাদের দক্ষতার সুনাম সারা বিশ্বে রেখেছে। তারা কাজের মাধ্যমে দেশের মানুষের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করে শুধু দেশের ভাবমূর্তি নয়, জাতিসংঘের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করেছে। জাতিসংঘে সেনাবাহিনী যেন তাদের শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারে, সেজন্য শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া বিডিআর বিদ্রোহের বিচারের রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেও দাবি করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সব বাহিনীকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সেনাবাহিনীর জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে, নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পরে তিনি সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন।
এদিকে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয় সশস্ত্রবাহিনী দিবস। এ উপলক্ষে গতকাল ফজরের নামাজ শেষে সেনানিবাস, নৌঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমানবাহিনীর ঘাঁটির মসজিদগুলোতে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দিবসটির শুরুতে সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোত্সর্গকারী সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ঢাকা (সদরঘাট), নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনীর জাহাজগুলো গতকাল বেলা ১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
এদিকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থাকায় ঢাকা সেনানিবাসের সব রাস্তা (শহীদ জাহাঙ্গীর গেট থেকে স্টাফ রোড পর্যন্ত প্রধান সড়ক) যানজটমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সেনানিবাসে অবস্থান করা ব্যক্তি এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের বহনকারী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন গতকাল সকাল ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং দুপুর দেড়টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত সেনানিবাস এলাকায় বন্ধ ছিল।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু