আজ যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা শুধু প্রশ্নবিদ্ধ নয়, আমার বিবেচনায় তিনটি কারণে বৈধতাই হারিয়েছে। প্রথমত, এই নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার হারিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, এটা একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন নির্বাচন এবং তৃতীয়ত, এই নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা সবই হারিয়েছে। ফলে আজ যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই বৈধতা হারিয়েছে।
আর সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়, এই নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার বিষয়টি। সহিংসতা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কারণ, সাধারণ মানুষই এর শিকার হয় এবং এটা তাদের ওপর দিয়েই যায়। নির্বাচনকে ঘিরে এই সহিংসতা পরিহার করতে হবে।
নাগরিক হিসেবে বলতে চাই, এই নির্বাচন কার্যত আমাদের ভোটাধিকার হরণ করছে। এই নির্বাচনের ব্যাপারে নাগরিকদের অসম্মতি রয়েছে এবং বিষয়টি পরিষ্কার। এত কিছুর পরও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষতিকর দিকটি হচ্ছে, এর ফলে সার্বিকভাবে সমাজের মধ্যে একটা অসহায়ত্ব বোধ তৈরি হয়েছে। এই বোধ যদি সমাজের গভীরে চেপে বসে তবে তা হবে খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি মনে করি, ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক সব পর্যায়েই দৃশ্যমান প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন। এই প্রতিবাদ হওয়া উচিত অহিংস ও নৈতিক প্রতিবাদ। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিবাদে কালো ব্যাজ ধারণ করে প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্য কেউ এতে শামিল হতে পারেন বা এ ধরনের প্রতিবাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারেন।
এই নির্বাচন বৈধতা না পাওয়ায় শুধু রাজনৈতিকভাবেই যে দেশে এর প্রভাব পড়বে তা নয়, এর অর্থনৈতিক প্রভাবও হবে গুরুতর। এই রাজনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে দেশ এক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও এর প্রধান শিকার হবে দেশের সাধারণ জনগণ।
হোসেন জিল্লুর রহমান: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।
0 comments:
Post a Comment