Home » , , » ব্রিটেনের 'ভিসা কলেজ' by আসিফ আহমদ

ব্রিটেনের 'ভিসা কলেজ' by আসিফ আহমদ

Written By Unknown on Sunday, July 31, 2011 | 8:51 AM

ব্রিটেনে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী এখন বিপদে। তারা একেক জন কেবল কলেজে ভর্তির সময় জমা দিয়েছেন ৫ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশের মুদ্রায় যা ৬ লাখ টাকারও বেশি। এর সঙ্গে রয়েছে যাওয়ার খরচসহ আরও বিপুল অর্থ ব্যয়। এখন তাদের মাথায় হাত। এসব ছাত্রছাত্রী যদি দুই মাসের মধ্যে নতুন কোনো কলেজে ভর্তি হতে না পারেন, তাহলে সে দেশ ছাড়তে হবে। কেউ কেউ কি লুকিয়ে সেখানে থেকে যাবেন? এর অর্থ হচ্ছে চিরজীবনের জন্য অবৈধ হয়ে পড়ার শঙ্কা।

বিভিন্ন হিসাবে বলা হচ্ছে, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রায় ২৫ হাজার বাংলাদেশি ব্রিটেনে পড়তে গেছেন। তাদের প্রত্যেকে যদি ৬ লাখ টাকা করে কলেজে ফিস হিসেবে জমা দিয়ে থাকেন তাহলে ২৫ হাজারের জন্য জমা পড়েছে অন্তত ১৫০ কোটি টাকা। প্রায় সমপরিমাণ অর্থ তাদের ব্যয় করতে হয়েছে ভিসা ফি, টিকিট ও দালালদের পেছনে।
ব্রিটিশ সরকার তাদের যাওয়ার জন্য ভিসা দিয়েছে এবং এ কারণে তারা সেখানে বৈধভাবেই গেছেন। এখন নিয়মে যথেষ্ট কড়াকড়ি আনা হয়েছে এবং এ কারণেই যত বিপত্তি। ব্রিটেনে পড়াশোনার জন্য যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ ছিল। এ কারণে অনেক ছাত্রছাত্রী সেখানে চলে যাওয়ায় আগ্রহবোধ করত। তারা আয় করে নিজের পড়াশোনা চালাতেন এবং একই সঙ্গে পরিবারেও কিছু অর্থ পাঠাতে পারতেন। কিন্তু এখন ব্রিটিশ সরকার নতুন নিয়ম করেছে_ বেসরকারি কলেজগুলোতে ছাত্র ভিসায় যারা আসবেন, তারা কাজ করতে পারবেন না। এর পাশাপাশি আর্থিক সচ্ছলতা প্রদর্শনের নিয়মকানুনও কঠোর করা হয়েছে। আরও একটি পরীক্ষায় তাদের পড়তে হচ্ছে_ ইংরেজি ভাষার ওপর দক্ষতা। অনেকেই হয়তো এতে উৎরে যেতে পারবেন, কিন্তু আটকা পড়ে যেতে পারেন অন্যান্য পরীক্ষায়।
বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা সেখানে পড়তে পেরেছেন ব্রিটিশ সরকারের নিয়মের কারণেই। এ সুযোগে বেশকিছু কলেজও গড়ে উঠেছিল। এর কয়েকটিতে রীতিমতো বাংলাদেশের কলেজের মতোই পরিবেশ। ধরে নেওয়া যায়, বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের একটি চক্র এ ধরনের ভর্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেখানে প্রচুর ছাত্রছাত্রীকে নিয়েছে। এমন অনেক কলেজের কথাও শোনা যায়, যেখানে শিক্ষার অবকাঠামো দুর্বল। লাইব্রেরি, ক্লাসরুম সুবিধার বালাই নেই। এমনকি প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকও নেই। বাংলাদেশে আমরা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বাড়বাড়ন্ত দেখি। তাই বলে ব্রিটেনেও? যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান নিয়ে মাথা ঘামানোর কেউ নেই, সেগুলো কী ভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারল? এখন দুর্দিনে তাদের পাশে কে দাঁড়াবে?
কেউ কেউ এসব কলেজের নাম দিয়েছে 'ভিসা কলেজ'। এর সঙ্গে জড়িত চক্র পড়াশোনার নামে কিছু লোককে ব্রিটেনে নিয়ে আসার ব্যবসায়ে জড়িত হয়ে পড়েছে। আগে ছাত্ররা এক কলেজ ছেড়ে অন্য কলেজে ভর্তি হতে পারত। এখন নিয়ম করা হয়েছে, নতুন কলেজে ভর্তি হওয়ার আগে ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন দফতরের অনুমতি নিতে হবে। আর এ কাজ খুব কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এভাবে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীর শুধু শিক্ষা জীবন নয়, ভবিষ্যৎও অন্ধকারময়। তারা নতুন কলেজে ভর্তি হওয়ার অনুমতি পেলেও নতুন করে অর্থ জমা দিতে হবে। কারণ যেসব কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে তারা ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ ফেরত দিচ্ছে না। এর দায় কে নেবে?
বাংলাদেশের অনেক তরুণ উন্নত দেশগুলোতে কাজের স্বপ্নে বিভোর থাকে। এজন্য বিপুল অর্থ খরচেও দ্বিধা করে না। তারা মনে করে, আয় করতে পারলে সব খরচ উসুল করা যাবে। কিন্তু ব্রিটেনে এখন যে অবস্থা তাতে এটি সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
বাংলাদেশ সরকার কি এ সমস্যা অবগত ছিল না? এখন কি তাদের কিছুই করার নেই?

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু