Home » , , » রূপের মোহেই নির্বাসন সুচিত্রার, মত মনোবিদদের

রূপের মোহেই নির্বাসন সুচিত্রার, মত মনোবিদদের

Written By Unknown on Sunday, January 19, 2014 | 10:47 PM

স্বেচ্ছা নির্বাসনের নেপথ্যে কি লুকিয়ে ছিল কোন গভীর মানসিক আঘাত? নাকি বিগতযৌবনা হওয়ার জ্বালা সহ্য করে উঠতে না পেরেই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন প্রয়াত সুচিত্রা সেন।
নায়িকা বুড়িয়ে যাচ্ছেন, সে বাস্তব সত্যিটাই কি মেনে নিতে না পেরে এমন ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সে রহস্য জানার উপায় আর নেই। কিন্তু মনোবিদরা বলছেন, অভিনয় জীবনে আচমকা দাঁড়ি টেনে দিয়ে সাড়ে তিন দশক নিজেকে চার দেয়ালে বন্দি করে নেয়ার নজির একেবারেই স্বাভাবিক নয়। বরং আমৃত্যু এমন জীবনযাত্রা বেছে নেয়ার মূলে নির্ঘাত কোন গভীর অবসাদ কিংবা অন্য কোন জটিল ও বিরল মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা থাকাই যুক্তিসঙ্গত। এই খবর জানিয়েছে কলকাতা থেকে প্রকাশিত এই সময়। কি সেই সমস্যা। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে নার্সিসিস্টিক অ্যাটিটিউড। নিজের রূপ-যৌবনের প্রতি অতি-ভালবাসা থেকে কখনও কখনও এমন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন মানুষ। চুল পাকছে, ত্বক কুঁচকে যাচ্ছে, এমন রূপে নায়িকাকে কেউ দেখুক, এমনটা হয়তো চাননি তিনি- মন্তব্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কেদাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি মনে করেন, এমন অস্বাভাবিক আচরণ আদতে বাস্তবকে মেনে নিতে না পারা। হয়তো তিনি চাইতেন, তার রিনা ব্রাউন, সাগরিকার সৌন্দর্যটাই লোকের মনে থেকে যাক। তার আক্ষেপ, ‘ঠিক সময়ে এ নিয়ে তার কাউন্সিলিং হলে হয়তো বাঙালির কাছে এতো বছর অধরা থেকে যেতেন না সুচিত্রা সেন।’ মনোবিদ সুবর্ণা সেনের কথায়, ‘যে সুচিত্রা সেন স্বপ্নসুন্দরী ছিলেন, তিনি বেশি বয়সে মানুষের সামনে এলে মানুষ সেই চেহারাটা কেমনভাবে নেবে, সে বিষয়ে হয়তো তিনি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। নার্সিসিজমে এমনটা হয়।’ যে হাসপাতালে জীবনের শেষ ২৬ দিন ভর্তি ছিলেন সুচিত্রা, সেখানকার চিকিৎসকরাও মনে করছেন, নিজের যৌবনের রূপ নিয়ে নায়িকা এতোটাই মোহগ্রস্ত ছিলেন যে, প্রৌঢ়ত্বে কিংবা বৃদ্ধাবস্থায় তাকে কেউ চিনে ফেলুক, এমনটা কখনও চাইতেন না তিনি। এক চিকিৎসক বলেন, ‘টিভিতে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা দেখে তিনি মাঝে মাঝে বলতেন, ওটা তো আমি নই, সুচিত্রা সেন। এই মনোভাবটাই তাকে আটকে রেখেছিল বাড়ির মধ্যে।’ যদিও স্বাভাবিক মানসিক অবস্থায় এমন আচরণ স্বাভাবিক নয় বলেই মত চিকিৎসকদের। ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পার্থসারথী বিশ্বাসও এ বিষয়ে একমত। তার বক্তব্য, একই রকম আচরণ দেখা গিয়েছিল হলিউড সুন্দরী গ্রেটা গার্বোর ক্ষেত্রে। সম্ভবত গার্বোকে নিয়ে মার্কিন মনোবিদরা গবেষণা করেছেন। তার জীবনে ঠিক কি ঘটেছিল তা সবারই অজানা। তবু মনে হয়, এদেশেও সুচিত্রার স্বেচ্ছা নির্বাসন রীতিমতো ডাক্তারি গবেষণার বিষয়বস্তু- মূল্যায়ন পার্থসারথীর। তিনি মনে করেন, নার্সিসিজমের জেরে কোন মানসিক আঘাতের (নার্সিসিস্টিক ইনজুরি) প্রভাবেই তার মধ্যে ‘পজিটিভ বডি ইমেজ’-এর উপসর্গ তৈরি হয়েছিল। নিজের রূপলাবণ্যের মোহে আচ্ছন্ন হয়েই নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেছিলেন সুচিত্রা।

0 comments:

Post a Comment

 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু