ত্রিমুখী প্রেম কাল হলো সূচীর by নুরুজ্জামান লাবু ও উৎপল রায়

Saturday, February 22, 2014

অনেক প্রেমের ফাঁদে আটকা পড়েছিল সুন্দরী বিমানবালা আফরোজা ইসলাম সূচী। কেউ তাকে জোর করে কাছে পেতে চেয়েছিল কেউবা গভীর প্রেমে মগ্ন হয়ে পড়েছিল তার।
অন্যদিকে সূচী নিজেই যার প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েছিল ভালবাসার সেই মানুষটি বিয়ে করে ফেলে অপর এক নারী চিকিৎসককে। এ নিয়ে চলে দীর্ঘ টানাপড়েন। শেষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথই বেছে নেন তিনি। পরিবার, পুলিশ ও সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহত সূচীর পরিবারের এক সদস্য জানান, নানামুখী প্রেম ও প্রতারণার চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন সূচী। আকর্ষণীয় চেহারা হওয়ার কারণে প্রথম দেখাতেই সবাই তার প্রেমে পড়ে যেত। এমনকি বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া স্বামী মোবারকও তাকে পুনরায় ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। এসব কারণেই সূচী শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার মতো কঠিন পথটি বেছে নেয়। গত বুধবার দুপুরে উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলায় সবার অগোচরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। গতকাল পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পুলিশ ওই বাসায় তল্লাশি চালিয়ে সূচীর আত্মহত্যার আলামত উদ্ধারের চেষ্টা করে। তবে কিছু উদ্ধার করা যায়নি। ঘটনার তদারককারী উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় ইউডি মামলা হয়েছে। পুলিশ সূচীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, লন্ডন প্রবাসী মোবারকের সঙ্গে বিয়ে বিচ্ছেদের পরও মোবারক তার পিছু ছাড়ছিলেন না। নানা সময়ে সূচীকে ত্যক্ত-বিরক্ত করতেন তিনি। মোবাইলে আবার সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য চাপ দিতেন। এমনকি একদিন এয়ারপোর্ট এলাকায় গাড়ি থেকে নামার পর সূচীর ব্যাগ নিয়ে পর্যন্ত টানাটানি করেন মোবারক। বিচ্ছেদের পরও মোবারক সূচীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। এদিকে মোবারকের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ইউনাইটেড এয়ার লাইন্সে থাকা অবস্থায় মোর্শেদের সঙ্গে পরিচয় হয় সূচীর। একপর্যায়ে দু’জনে গভীর প্রেমে মত্ত হয়ে ওঠেন। কিন্তু প্রতারক প্রেমিক মোর্শেদ সূচীর পাশাপাশি এক নারী চিকিৎসকের সঙ্গেও প্রেম চালিয়ে যেতে থাকেন। মোর্শেদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে তাদের প্রেমে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় ওই নারী চিকিৎসক। নিজের পেটে মোর্শেদের সন্তান জানিয়ে মোর্শেদকে বিয়ে করতে বাধ্য করেন তিনি। মোর্শেদও বাধ্য হয়ে ওই নারী চিকিৎসকে বিয়ে করেন। এসব কিছুই জানতেন না বিমানবালা সূচী। মোর্শেদের প্রেমে অন্ধ হয়ে প্রেমিকের সম্মান রক্ষায় বিয়েতে সম্মতি দেন তিনি। কিন্তু মনের ভেতরে প্রতারিত হওয়ার তীব্র যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায়। মায়ের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করলেও আর কেউ তার এই কষ্ট বুঝতে পারেনি। সূত্র জানায়, মোর্শেদের প্রেমে প্রতারিত হয়েই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সূচী।
এদিকে অপর একটি সূত্র জানায়, গত বছরের জুন মাসে সূচীর সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যোগদান করা কেবিন ক্রু মির্জা আদনানও তার সঙ্গে প্রেমে জড়ানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়েও বিরক্ত ছিলেন সূচী। কিন্তু আদনান ছিলেন নাছোড়বান্দা। সূচীর সহকর্মীদের একজন জানান, এক সময় আদনানের প্রতিও কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েন সূচী। ত্রিমুখী প্রেম আর সাবেক স্বামীর পেছনে লেগে থাকা, সব মিলিয়ে নিজের জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে যায় সূচীর। চারদিকের মানুষের প্রেম-প্রতারণায় বেঁচে থাকাটা তার কাছে অর্থহীন হয়ে পড়ে।
এদিকে আদরের সন্তানকে হারিয়ে পাগল প্রায় হয়ে গেছেন সূচীর মা-বাবা। মা সুলতানা ইসলাম খান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়েটার বুকভরা যন্ত্রণা ছিল। এই যন্ত্রণা সইতে না পেরেই সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার সূচী আমাকে মুঠোফোনে বলে ‘মা তোমাকে খুব মিস করছি’। সেদিনই আমার মনে হয়েছে কিছু একটা হয়েছে। আমি তাকে হাজারবার জিজ্ঞাসা করেছি। কিন্তু আমাকে কিছু বলেনি। অথচ সে সবসময় সব কিছু আমার সঙ্গে শেয়ার করতো। কিন্তু এমন কঠিন একটা সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে মেয়েটা আমার কাউকে কিছু বলে নাই।
উত্তরা পশ্চিম থানা সূত্রে জানা গেছে, বিমানবালা সূচীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পর গতকাল দুপুরে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫। সূচীর মা সুলতানা ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে তদন্ত কাজ চলছে। এ জন্য ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তদন্তের অংশ হিসেবে সূচীর কথিত প্রেমিক মাহবুব মোর্শেদ, মির্জা আদনান, বান্ধবী লিকমাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে নজরদারির কারণে এক প্রকার ‘গৃহবন্দী’ অবস্থায় দিন কাটছে সূচীর কথিত প্রেমিক মোর্শেদের। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়া ছাড়া ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না তিনি। গতকাল মোর্শেদের বাসস্থান উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের ২২ নম্বর ভবনের বাসায় গিয়ে কথা বললে প্রথমে বাসার নিরাপত্তাকর্মী হাবিব জানায়, স্যার (মোর্শেদ) কদিন ধরে অসুস্থ। কারও সঙ্গে যোগাযোগ বা কথা বলছেন না। পরে আসতে হবে। পরে যোগাযোগ করা হলে মাহবুব মোর্শেদের ছোট ভাই পরিচয় দেয়া সোনাল নামে একজন জানান, বিমানবালা সূচীর সঙ্গে মোর্শেদের কোন প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। তিনি বলেন, সূচীর সঙ্গে তার কোন প্রেম-ভালবাসার সম্পর্ক ছিল না। তার ভালবাসার সম্পর্ক ছিল ‘অন্য কারো’ সঙ্গে। এ বিষয়ে পুলিশকে যা বলার, বলা হয়েছে। এর বেশি কিছু আর বলতে চাই না। সূচীর মৃত্যুর জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে তাকেই (মোর্শেদ) দায়ী করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তারা (সূচীর পরিবার) কেন এমন বলছে, সেটা তারাই ভাল বলতে পারবে’।
ঘটনার তদারককারী উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, সূচীর মা একটি ইউডি মামলা করেছেন। তদন্ত কাজও চলছে সমানতালে। তদন্তের গতি ও পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে সবকিছু নির্ভর করছে ভিকটিমের পরিবারের ওপর। তারা যদি অভিযোগ না করে তাহলে আইনানুযায়ী পুলিশ তার ভূমিকা পালন করবে। এদিকে গতকাল দুপুরে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল সূচীর বাসস্থান উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় সূচীর মা সুলতানা ইসলাম, বোন ও আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে হাজির হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মাহমুদ ফ্ল্যাটে থাকা সূচীর ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্র তার মাকে বুঝিয়ে দেন।

যৌন জীবনে অতৃপ্ত তাই!

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের চেসনির বাসিন্দা ৫৮ বছর বয়সী এক নারীকে তার ৭২ বছর বয়সী স্বামী নিজের বোনদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বলেছেন।
ওই দম্পতির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। জরুরি নম্বর ৯১১- এ ফোন করে শেষ পর্যন্ত পুলিশি সহায়তা চেয়েছেন ওই নারী। পুলিশের কাছে তিনি বলেছেন, গত ২ বছর তাদের যৌন জীবনে কিছু সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তেমন একটা ভালো সময় পার করছিলেন না তারা। ফলে, দাম্পত্য জীবনে সেটার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দম্পতিদের জন্য বিশেষ চিকিৎসা বা থেরাপি নেয়ার ব্যাপারে ওই নারী তার স্বামীকে প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হয়ে উল্টো তার স্বামী তাকে বলেন তার বোনদের সঙ্গে রাত কাটাতে। এতে তাদের যৌন জীবন আরও উত্তেজনাময় হয়ে উঠবে বলেও মন্তব্য করেন স্বামী। স্বামীকে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি সে ধরনের মানুষ নন। ক্ষুব্ধ হয়ে ৯১১ নম্বরে ফোন করে পুলিশি সহায়তা চান তিনি। ওই দম্পতির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। একই সঙ্গে স্বামীর বোনেরা যাতে কখনও তাদের বাড়িতে ঢুকতে না পারেন এবং তাদের পারিবারিক সম্পর্কে নাক না গলান, তা নিশ্চিতেও পুলিশি সহায়তা চান ওই নারী। 

অভিনব প্রতিবাদে খারাপ ছবির তালিকা শীর্ষে গুন্ডে

Friday, February 21, 2014

যশরাজ ফিল্মসের ‘গুন্ডে’ ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করার পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও ব্লগে। পাশাপাশি আইএমডিবি সাইটে কড়া মন্তব্য করে রিভিউ লিখেছেন অসংখ্য মানুষ।
শুধু তা-ই নয়, এই মুহূর্তে আইএমডিবি রেটিংয়ে সর্বনিম্ন পয়েন্ট ‘গুন্ডে’ ছবির দখলে। মাত্র ১.৪ পয়েন্ট পেয়ে আইএমডিবি বটম হান্ড্রেড চার্টের এক নম্বরে অবস্থান করছে ‘গুন্ডে’ ছবিটি। ২ ও ৩ নম্বরে রয়েছে হলিউডের দুই ছবি ‘ফাইনাল জাস্টিস’ (১৯৮৫) ও ‘দ্য হটি অ্যান্ড দ্য নটি’ (২০০৮)।

আইএমডিবি সাইটে ঢাকা থেকে অনীক তাঁর ‘বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তনের পাঁয়তারা’ শিরোনামের রিভিউয়ে লিখেছেন, ‘এটা খুবই নিম্নমানের একটি চলচ্চিত্র যেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি। পাকিস্তান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিল বাংলাদেশের আপামর জনগণ। এই যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সাহায্য করেছিল। কিন্তু মূল যুদ্ধটা করেছিল বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ভেবে পাই না, বলিউডে কীভাবে এমন জঘন্য একটি ছবি নির্মিত হলো! এমন বাজে একটি ছবি দেখে সবাইকে সময় নষ্ট না করার পরামর্শ রইল আমার পক্ষ থেকে।’

কানাডা থেকে তানভীর লিখেছেন, ‘ছবিটির মাধ্যমে মিথ্যা ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে দর্শককে ভুল পথে পরিচালনা করবে। এমন বড় বাজেটের একটি ছবিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ছবিটির পরিচালকের প্রতি আমার অনুরোধ, ভবিষ্যতে কোনো ছবি নির্মাণের আগে সতর্কতার সঙ্গে ইতিহাস পড়ে নেবেন। আর তা সম্ভব না হলে কমেডি ঘরানার ছবি তৈরি করবেন।’

নিউইয়র্ক থেকে ভিকি লিখেছেন, ‘ছবিটির গল্প খুবই অশোভনভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের এক অর্থে আক্রমণই করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। কোনোভাবেই সেটাকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ বলা যাবে না। যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনী সহায়তা করেছিল মাত্র। এর বাইরে আর কিছুই না। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিল এদেশের মুক্তিযোদ্ধারা। স্বাধীন দেশের অভ্যুদয়ের পুরো কৃতিত্বটাই তাদের। অথচ ‘গুন্ডে’ ছবির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীকেই পুরো কৃতিত্ব দেওয়ার হীন চেষ্টা চালিয়েছে যশরাজ ফিল্মস। এমন অসত্য তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ছবি তৈরির বিষয়টি খুবই অপ্রত্যাশিত। ছবির নির্মাতাদের ধিক্কার জানানোর ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি আমি।’

যুক্তরাজ্য থেকে আকাশ শ্রীবাস্তব লিখেছেন, ‘রোম্যান্স, ব্রোম্যান্স, আর চটুল গানের মিশেলে এক জগাখিচুড়ি তৈরি করেছেন ‘‘গুন্ডে’’ ছবির পরিচালক। ছবিটির প্রথম আধা ঘণ্টা দেখার পর যেকোনো দর্শকই ধরতে পারবেন যে এর চিত্রনাট্য খুবই দুর্বল। সংলাপগুলোও জঘন্য। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ছাড়া ছবিটিতে দেখার মতো আর কিছুই নেই। ছবিটি দেখার মানে সময় এবং অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই না।’

এমন আরও অসংখ্য নেতিবাচক রিভিউ লিখেছেন ক্ষুব্ধ দর্শকেরা। বলা যায়, এর মধ্য দিয়ে অসত্যের বিরুদ্ধে এক অভিনব প্রতিবাদের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাঁরা।  

প্রসঙ্গত, যশরাজ ফিল্মসের ‘গুন্ডে’ ছবিটি বলিউডে মুক্তি পেয়েছে ১৪ ফেব্রুয়ারি। একই দিন কলকাতায়ও বাংলা ভাষায় ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আলী আব্বাস জাফর পরিচালিত ছবিটির বাজেট ছিল ৫০ কোটি রুপি। এর বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, রণবীর সিং, অর্জুন কাপুর, ইরফান খান প্রমুখ।

মুক্তির পরপরই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করার পাশাপাশি ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ ওঠে ছবিটির বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে যশরাজ ফিল্মসের পক্ষ থেকে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদের উদ্দেশে যশরাজ ফিল্মসের অফিসিয়াল ফেবসুক পাতায় লেখা এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের ছবিতে যেভাবে গল্প তুলে ধরা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের অনেক ভাই তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। ছবিটির কাহিনি ও গল্প পুরোপুরি কাল্পনিক। কোনো জাতি, সমাজের বিশেষ কোনো গোত্র কিংবা কোনো ব্যক্তির প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শনের অভিপ্রায় আমাদের ছিল না। তার পরও বাংলাদেশি ভাইরা যদি আমাদের কাজ দেখে আহত হন কিংবা অশ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়েছে বলে মনে করেন, তাহলে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি আমরা।’

‘গুন্ডে’ ছবিটির শুরুর দিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ভিডিও চিত্র দেখানোর পাশাপাশি হিন্দি ভাষায় বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ হিন্দুস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে তৃতীয় যুদ্ধ শেষ হয়। ৯০ হাজার পাকিস্তানি সেনা হিন্দুস্তানের সেনাদের সামনে আত্মসমর্পণ করেন। জন্ম হয় এক নতুন দেশ, বাংলাদেশ। ছবিটির শুরুর দৃশ্যে দেখানো হয়, ভারতীয় যোদ্ধাদের সামনে আত্মসমর্পণ করছেন পাকিস্তানি সেনারা।  আর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশের। পেছনে দেখা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পোস্টার।

‘গুন্ডে’ ছবিতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ফুটেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখানো হলেও কোথাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ও ব্লগে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই অভিযোগ করেন, ছবিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মহান মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করা হয়েছে।

‘বেবি ডল’ নিয়ে আলোচনায় সানি

Saturday, February 15, 2014

মার্চের প্রথম দিকেই মুক্তি পেতে যাচ্ছে বর্তমান সময়ের বলিউডের আলোচিত তারকা সানি লিওন অভিনীত ‘রাগিনি এমএমএস ২’ ছবিটি। হরর-থ্রিলারনির্ভর এ ছবিটি প্রযোজনা করছেন একতা কাপুর।
নির্মাণের ঘাষণা দেয়ার পর থেকেই ছবিটি নিয়ে দর্শকদের কৌতূহলও তৈরি হয়েছে প্রবলভাবে। তবে মুক্তির আগে সম্প্রতি ভালবাসা দিবসে প্রকাশ করা হয়েছে এই ছবিতে সানি লিওনের একটি হট আইটেম গান। ‘বেবি ডল’ শীর্ষক এই আইটেম গানটি এরই মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। একই সঙ্গে ইউটিউব ও টিভি চ্যানেলে মুক্তি দেয়া এই আইটেম গানটিতে ব্যাপক খোলামেলারূপে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন সানি। শুধু তাই নয়, এখানে তাকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ আবেদময়ীরূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। গানে বেশ কিছু অন্তর্বাস ও একেবারেই ছোট ছোট টপস পরে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন তিনি। এখানে তিনি পারফর্মও করেছেন অসাধারণ। এরই মধ্যে অত্যন্ত অল্প সময় ইউটিউবে গানটি উপভোগ করেছেন রেকর্ড সংখ্যক দর্শক। প্রচারের একদিনের মাথায়ই বেশ কয়েকটি বলিউডভিত্তিক গানের চ্যানেলে টপচার্টের শীর্ষে অবস্থান করছে সানি লিওনের ‘বেবি ডল’। ছবির প্রচারণায় গানটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে ইতিমধ্যে। সব মিলিয়ে বলা যায় অভাবনীয় আলোড়ন তুলেছে সানি লিওনের এই আইটেম গানটি। এদিকে ছবিতে সময়ের আলোচিত সংগীত তারকা হানি সিংয়ের সঙ্গেও একটি গানে পারফর্ম করেছেন সানি। আগামী কিছুদিনের মধ্যেই সেটি অনএয়ার হবে। ‘বেবি ডল’ গানটির সাড়া নিয়ে দারুণ খুশি সানি লিওন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘লায়লা’র পর এটি আমার দ্বিতীয় আইটেম গান। ভাবতে পারিনি অল্প সময়ের মধ্যে এতোটা রেসপন্স পাবো। আমি কৃতজ্ঞ আমার ভক্ত-দর্শকদের কাছে। ফেসবুক, টুইটার, ই-মেইল, ফোন, এসএমএসে  সবাই আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আশা করছি গানটির মতো করে ছবিটিও দর্শক পছন্দ করবেন। কারণ, গতানুগতিক ধারার বাইরের কাহিনীর একটি ছবি এটি। আমি নিজে অনেক আশাবাদী ‘রাগিনি এমএমএস-২’ ছবিটি নিয়ে।

এবার আইটেম গার্ল

Tuesday, February 4, 2014

এরই মধ্যে ‘কামাসূত্র থ্রিডি’ ছবিতে অভিনয় করে আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন শারলিন চোপড়া। প্রাপ্তবয়স্ক এ ছবিকে অনেকটাই পর্নো ছবির সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। ছবিতে একাধিক নগ্ন এবং যৌন দৃশ্যে কাজ করেছেন শারলিন।
এদিকে এর আগে একাধিক বিচে অর্ধনগ্ন ফটোশুটেও মডেল হিসেবে বহুবার ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন তিনি। ‘কামসূত্র থ্রিডি’ ছবিটি চলতি বছরই মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে। এদিকে নতুন খবর হলো, নগ্ন দৃশ্যের পারফরমার থেকে এবার আইটেম গার্ল হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটছে শারলিনের। সম্প্রতি নতুন একটি ছবিতে আইটেম গানের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। ছবিটি পরিচালনা করছেন পূজা ভাট। ছবির মূল ভূমিকায় অভিনয় করছেন রণদীপ হুদা এবং এষা গুপ্তা। এ ছবিতে আইটেম গানে আবেদনময়ী শারলিনকেই আবিষ্কার করবেন দর্শক। খুব শিগগিরই এই গানটির দৃশ্যায়ন শুরু হবে মুম্বইতে। ধারণা করা হচ্ছে, ‘কামসূত্র থ্রিডি’ মুক্তির আগেই আইটেম গানটি প্রকাশ করা হবে। মূলত ছবির প্রচারণার জন্যই এটি করা হচ্ছে। জানা গেছে, এই আইটেম গানটিতেও ব্যাপক খোলামেলা হয়ে দর্শকদের সামনে আসছেন শারলিন। এখানে ৫০ জন নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে পারফর্ম করবেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে দারুণ খুশি শারলিন। এরই মধ্যে প্রথমবারের মতো আইটেম গানে কাজ করা নিয়ে নিজের অনুভূতিও প্রকাশ করেছেন তিনি মিডিয়ার কাছে। এ বিষয়ে শারলিন চোপড়া বলেন, আইটেম গানে কাজ করার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই ছিল। বেশ কিছু প্রস্তাবও পেয়েছি গত এক বছরে। কিন্তু সেগুলো মনের মতো হচ্ছিল না। এবারের গানটির আয়োজন আমার ভাল লেগেছে। এর জন্য বিশাল একটি সেট তৈরি করা হচ্ছে। গানটির কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করবেন গনেশ। এখানে অনেক আবেদনময়ীরূপে উপস্থাপিত হবো আমি। আমি অনেক আশাবাদী গানটি নিয়ে।

দাম্পত্যের তুষের অনলে জ্বলছিলেন সুনন্দা পুষ্কর

Monday, January 20, 2014

দাম্পত্যের তুষের অনলে জ্বলছিলেন সুনন্দা পুষ্কর। স্বামী ভারতের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রী শশী ঠারুর পরকীয়ায় জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল তিক্ত সম্পর্ক।
এর এক পর্যায়ে রাজধানী নয়া দিল্লির এক অভিজাত হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তার মৃতদেহ উদ্ধার করার পর হাসপাতালে নেয়া হয় পোস্টমর্টেমের জন্য। এরপর বলা হয়েছে, সুনন্দা পুষ্করের বড় ধরনের কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল না। যে পুরুষকে ভালবেসে বিয়ে করে তিনি সুখের সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কিছুদিন আগে আবিষ্কার করেন তিনি অন্য নারীর প্রেমে মজেছেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। এ নিয়ে টুইটারে তিনি ফাঁস করে দেন নানা গোপন বিষয়। নয়া দিল্লির হোটেলে ৫২ বছর বয়সী সুনন্দা পুষ্কর ১৫ই জানুয়ারি একা অবস্থান করেন। পরের দিন তার সঙ্গে যোগ দেন মন্ত্রী শশী। সুনন্দা তার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে তথ্য ফাঁস করে দেয়ার পরদিনই তার রহস্যময় মৃত্যু হয়। হোটেল থেকে সুনন্দার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেরালা ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা ভালমতো পরীক্ষা করে বলেন, সুনন্দার বড় কোন অসুখই ছিল না। সোমবার এ বিষয়ে মন্ত্রী শশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে পুলিশের। এ জন্য আগে থেকেই তাকে প্রস্তুতি নিতে দু’ দিন সময় দেয়া হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, সুনন্দার মৃত্যু আকস্মিক ও অস্বাভাবিক। তার শরীরে রয়েছে ক্ষতের চিহ্ন। শনিবার লোদি রোডে সুনন্দার মৃতদেহ দাহ করা হয়। ওদিকে এর আগের এক রিপোর্টে বলা হয়, টুইটারে পাকিস্তানি সাংবাদিক মেহের তারারের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন শশী ঠারুর। বুধবার শশী ঠারুরের টুইটার একাউন্টে ইঙ্গিত দেয়া হয়, লাহোর ভিত্তিক সাংবাদিক মেহের তারারের সঙ্গে প্রণয় চলছে ৫৭ বছর বয়সী শশীর। এরপরই তিনি টুইটারে লেখেন, তার একাউন্ট হ্যাক হয়ে গেছে। মেহেরের সঙ্গে তার কোন প্রেম নেই। এর আগে একবার সুনন্দা পুষ্কর দ্য ইকোনমিক টাইমস পত্রিকাকে বলেন, শশী বা তার একাউন্ট কেউ হ্যাক করেনি, তারাই এসব বার্তা দিচ্ছেন টুইটারে। তিনি বলেছেন, লাহোর ভিত্তিক মেহের তারার যেসব ব্যক্তিগত বার্তা শশী ঠারুরকে পাঠিয়েছেন সেগুলোই তিনি পোস্ট করেছেন। টুইটারে মেহের তারার বলেছেন, টুইটারে তিনি সব সময় প্রকাশ্যে শশী ঠারুরের প্রশংসা করেছেন। তার বইয়ের পর্যালোচনা করেছেন। এ নিয়ে লুকোচুরির কিছুই নেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সুনন্দা পুষ্করকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তার স্বামী শশী ঠারুরের সঙ্গে মেহের তারারের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য তিনি বিচ্ছেদ চাইবেন। এনডিটিভি চ্যানেলকে সুনন্দা পুষ্কর বলেছেন, মেহের তারার তার স্বামীকে বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন শশী-সুনন্দা দম্পতি বললেন, তারা বিবাহিত, সুখী এবং এভাবেই বাকিটা সময় থাকতে চান। কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়! এখন দু’জন দু’ ভুবনের বাসিন্দা।

ওদিকে সুনন্দা পুস্কর ও শশী ঠারুরের জীবনে ঝড় তোলার অভিযোগ পাকিস্তানি যে নারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনি বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। মেহের তারার বলেছেন, শশী ঠারুর ও তার স্ত্রী সুনন্দা পুস্করের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টিতে তার কোন ভূমিকা নেই। সুনন্দা পুস্করের লাশ দিল্লির একটি অভিজাত হোটেল থেকে উদ্ধার করার পর এ বিতর্ক ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। ঠিক এমন সময় পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে মেহের তারার বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় ষড়যন্ত্রের শিকার। লাহোরভিত্তিক এই সাংবাদিকের বয়স ৪৫ বছর। এরই মধ্যে তিনি টুইটার একাউন্টে পাল্টে ফেলেছেন প্রোফাইল ছবি। তিনি বলেছেন, শশী ঠারুরের সঙ্গে তার দু’বার সাক্ষাত হয়েছে। একবার গত এপ্রিলে ভারতে। দ্বিতীয়বার গত জুনে দুবাইতে। তখন সেখানে অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মেহের বলেন, যখন আমি তাকে নিয়ে একটি লেখা লিখেছি, তখন অন্য মেয়ে হয়তো তা পছন্দ করবে না। সুনন্দা তার স্বামীকে অন্য জন এভাবে প্রশংসা করছে তা হয়তো সহ্য করতে পারেন নি। তাই তিনি শশীকে আমার সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও শশী টুইটারে আমাকে ফলো করতে থাকেন। আমি বুঝতে পারি না তার স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বললে বা ই মেইলে যোগাযোগ করলে তাতে তার সমস্যা আছে।

অন্তরালে দুই কিংবদন্তি- গ্রেটা গারবো থেকে সুচিত্রা সেন

গ্রেটা গারবো ও সুচিত্রা সেন। দু’জনেই অভিনেত্রী। একজন বাংলার মেয়ে। অন্যজন সুদূর সুইজারল্যান্ডের। তারপরও তাদের মধ্যে রয়েছে অদভুত মিল। তারা দু’জনেই চোখের চাহনিতে লিখে দিয়েছেন অমর কবিতা।
প্রেমের জয়গান তাতে ফুটে উঠেছে এক অকৃত্রিমতায়। সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে দু’জনেই হারিয়ে গিয়েছিলেন প্রেমের এক গোপন ভুবনে। সেখান থেকে তাদের মুক্তি মেলে নি কোনদিন। নিজেরাই নিজেদের করেছেন লোকচক্ষুর আড়াল। সেভাবেই কেটে গেছে তাদের জীবনের বড় অংশ। বলা যায়, এ সময়টা তাদের জীবনের অন্ধকার সময়। নিজেরাই নিজেদের কষ্ট দিয়েছেন। ঘরের চার দেয়ালে বন্দি হয়েছেন স্বেচ্ছায়। তারপর আর কোনদিন পৃথিবীর কারও সামনে মুখ দেখান নি। শত চেষ্টা করেও তাদের একান্ত আপনজন বাদে কাউকে দেখান নি মুখ। এমন কি মৃত্যুর পরেও কাউকে দেখতে দেন নি ‘স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা’কে। দেখতে দেন নি মৃত্যুর পরেও সেই অজস্র কবিতার চোখ এখনও উত্তম কুমারের জন্য পথ চেয়ে আছে কিনা। গ্রেটা গারবো কি জীবনের শেষ সময়টাতে তার প্রিয়তম জন গিলবার্টের ডাক শুনতে পেয়েছিলেন! ১৯০৫ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বরে সুইডেনের স্টকহোমে জন্ম গ্রেটা গারবোর। তিনি প্রথমে অভিনয়ে কাজ শুরু করেন ইউরোপে। এরপর ১৯ বসন্তের যুবতী গ্রেটা গারবো যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এমজিএম-এর ব্যানারে কাজ করার জন্য। রমা দাস গুপ্তা যেমন কলকাতা গিয়ে সুচিত্রা সেন হয়ে ওঠেন, গ্রেটা গারবোর ক্ষেত্রে তেমন হয় নি। তিনি নাম পাল্টান নি। তার মতোই অসাধারণ, অবর্ণনীয় সৌন্দর্য্যের অধিকারী ছিলেন সুচিত্রা। শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তার আগে গ্রেটা গারবো কাজ করেন নির্বাক ও পরে সবাক চলচ্চিত্রে। তাকে বলা হয় হলিউডের সবচেয়ে খেয়ালি তারকা। তবে তার সঙ্গে সুচিত্রা সেনের রয়েছে কিছু পার্থক্য। গ্রেটা গারবো কখনও বিয়ে করেন নি। তার কোন সন্তান নেই। সারা জীবনই তিনি বেছে নেন নিঃসঙ্গ জীবন। কিন্তু সুচিত্রা সেন বিয়ে করার পরই এসেছেন চিত্রজগতে। তার কন্যা মুনমুন সেন, নাতনি রিয়া ও রাইমা সেন অভিনেত্রী। ১৮ বছর বয়সে কলকাতার বিশিষ্ট শিল্পপতি প্রিয়নাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ে হয় সুচিত্রার। গ্রেটা গারবো যাদের সঙ্গে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘনিষ্ঠ প্রেম গড়ে উঠেছিল জন গিলবার্টের সঙ্গে। ১৯২৬ থেকে ১৯২৭ সাল পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন সময়ে তিনি অবস্থান করেন গিলবার্টের সঙ্গে। তাদের মধ্যে এমন গাঢ় প্রেমকে পুুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে এমজিএম। এ সংস্থা তৈরি করে ‘ফ্লেশ অ্যান্ড দ্য ডেভিল’। নির্মিত হয় ‘লাভ’ এবং ‘এ ওম্যান অব অ্যাফেয়ার্স’। এগুলো ব্যবসাসফল হয়। বহুবার তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন গিলবার্ট। ১৯২৬ সালে একবার তাকে ইলেন বোর্ডম্যান ও কিং ভিদোরের সঙ্গে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু বিয়ের আসরে উপস্থিত হন নি গ্রেটা গারবো। ১৯৩৭ সালে লিওপোল্ড স্টকোস্কি নামে এক কনডাক্টরের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তার সঙ্গে তিনি পরের বছরগুলো চুটিয়ে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। শুধু বন্ধুত্ব নয়, গাঢ় প্রেম। এই প্রেমের উন্মাতাল হাওয়ায় তারা মাঝে মাঝেই হারিয়ে যেতে থাকেন ইউরোপে। এছাড়াও গ্রেটা গারবোর প্রেম গড়ে উঠেছিল সিসিল বিটন, রাশিয়ার ধনকুবের দিলীপ কুমার, সঞ্জীব কুমার, ধর্মেন্দ্র, দেব আনন্দ, ভারত ভূষণ, শেখর, জর্জ শলির সঙ্গে। অন্যদিকে, সুচিত্রা সেন অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, বসন্ত চৌধুরী, কমল চিত্র, প্রশান্ত কুমার, রঞ্জিত মল্লিক প্রমুখের সঙ্গে। এর মধ্যে উত্তম-সুচিত্রা জুটি যেন জীবন্ত হয়ে কথা বলতো। তাদের অভিনয়কে কখনও মনে হয় নি অভিনয়। একান্তে, মনের গভীরে, চোখে চোখে তারা যে অভিনয় করে গেছেন তা তাদেরকে চিরজীবন দিয়েছে। তাদের মধ্যে গড়ে উঠেছিল সত্যিকার প্রেম। তারই ধারাবাহিকতায় সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র থেকে অবসর নেয়ার পর ৩৫টি বছর ঘরের ভিতর নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন ভীষণ জেদি। ১৯৭৮ সালে তার ‘প্রণয় পাশা’ ভাল ব্যবসা করে নি। অভিমানে তিনি চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যান বাকিটা জীবন। ওদিকে গ্রেটা গারবোও চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। তিনিও নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ থেকেই বলাবলি আছে যে, তাকে দেখেই সুচিত্রা সেন লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যেতে উদ্বুদ্ধ হন। এ জন্যই সুচিত্রাকে কাব্য করে বলা হয় ‘বাংলার গ্রেটা গারবো’। তবে গ্রেটা গারবো বিয়ে না করলেও তার ছিল উদ্দাম, উন্মুক্ত প্রেমময় জীবন। তিনি একাধারে পুরুষ ও মেয়েদের সঙ্গে সমকামিতায় লিপ্ত হয়েছেন। ১৯২৭ সালে মঞ্চ ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী লিলিয়েন তাশমানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপরেই তারা প্রেমে পড়ে যান। এছাড়া সমকামিতা গড়ে ওঠে তার মারসিডিস ডি একোস্তার সঙ্গে। এ সময়ে তাদের মধ্যে বিনিময় হয় ১৮১টি প্রেমপত্র, কার্ড, টেলিগ্রাম। এর বেশির ভাগই এখন সংরক্ষিত আছে ফিলাডেলফিয়ার রোদেনবাক মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরিতে। শুরুর দিকে গ্রেটা গারবো চলচ্চিত্রের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলতেন। তিনি একা একা থাকতে ভালবাসতেন। কোন বন্ধুর সঙ্গে অযথা আড্ডা দেয়া পছন্দ করতেন না। তেমনি সুচিত্রা সেন প্রথম দিকে চলচ্চিত্রে আসতেই চান নি। তাকে বলা যায় অনেকটা জোর করে এ জগতে প্রবেশ ঘটিয়েছেন তার স্বামী। গ্রেটা গারবো কখনও অটোগ্রাফ দেননি। ভক্তদের চিঠির কোন জবাব দেন নি। সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হাতেগোনা। কখনও তিনি অস্কার উৎসবে যোগ দেননি। তাকে অস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কারে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রচার বিমুখ গ্রেটা গারবো সেই পুরস্কার আনতে যান নি। লোকচক্ষুর অন্তরালে যখন তিনি নিজেকে নিয়ে যান তখন শত চেষ্টা করেও বাইরের কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন নি। এ সময় ভীষণ বিষণ্নতা তাকে ঘিরে ধরে। এক পর্যায়ে তার স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে। ১৯৮৪ সালে এর জন্য তাকে সফল চিকিৎসা দেয়া হয়। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শুধুমাত্র তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা জানতে পারেন সপ্তাহের তিন দিন- সোমবার, বুধবার ও শুক্রবার নিউ ইয়র্ক হাসপাতালের দ্য রোগোসিন ইনস্টিটিউটে ৬ ঘণ্টা করে তিনি ডায়ালাইসিস করান। ১৯৯০ সালের ১৫ই এপ্রিল ৮৪ বছর বয়সে ওই হাসপাতালেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরে শোনা যায় তিনি গ্যাস্ট্রিকেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার মৃতদেহ সমাহিত করা হয়েছে মানহাটনে। অন্যদিকে সূচিত্রা সেন ফিরিয়ে দিয়েছেন রাজ কাপুরের অফার, গ্রহণ করেন নি দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার। স্বেচ্ছা অন্তরালে যাওয়ার আগে অভ্যস্ত ছিলেন তুমুল বৈভবের বিলাসী জীবনে। রঙ্গ-কৌতুকেও ছিলেন অভ্যস্ত। এক অনুষ্ঠানে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে দেখিয়েছিলেন কিভাবে এ দৃশ্যটি তিনি রূপায়িত করেছেন ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবিতে।

রূপের মোহেই নির্বাসন সুচিত্রার, মত মনোবিদদের

Sunday, January 19, 2014

স্বেচ্ছা নির্বাসনের নেপথ্যে কি লুকিয়ে ছিল কোন গভীর মানসিক আঘাত? নাকি বিগতযৌবনা হওয়ার জ্বালা সহ্য করে উঠতে না পেরেই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন প্রয়াত সুচিত্রা সেন।
নায়িকা বুড়িয়ে যাচ্ছেন, সে বাস্তব সত্যিটাই কি মেনে নিতে না পেরে এমন ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সে রহস্য জানার উপায় আর নেই। কিন্তু মনোবিদরা বলছেন, অভিনয় জীবনে আচমকা দাঁড়ি টেনে দিয়ে সাড়ে তিন দশক নিজেকে চার দেয়ালে বন্দি করে নেয়ার নজির একেবারেই স্বাভাবিক নয়। বরং আমৃত্যু এমন জীবনযাত্রা বেছে নেয়ার মূলে নির্ঘাত কোন গভীর অবসাদ কিংবা অন্য কোন জটিল ও বিরল মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা থাকাই যুক্তিসঙ্গত। এই খবর জানিয়েছে কলকাতা থেকে প্রকাশিত এই সময়। কি সেই সমস্যা। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে নার্সিসিস্টিক অ্যাটিটিউড। নিজের রূপ-যৌবনের প্রতি অতি-ভালবাসা থেকে কখনও কখনও এমন নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন মানুষ। চুল পাকছে, ত্বক কুঁচকে যাচ্ছে, এমন রূপে নায়িকাকে কেউ দেখুক, এমনটা হয়তো চাননি তিনি- মন্তব্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কেদাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি মনে করেন, এমন অস্বাভাবিক আচরণ আদতে বাস্তবকে মেনে নিতে না পারা। হয়তো তিনি চাইতেন, তার রিনা ব্রাউন, সাগরিকার সৌন্দর্যটাই লোকের মনে থেকে যাক। তার আক্ষেপ, ‘ঠিক সময়ে এ নিয়ে তার কাউন্সিলিং হলে হয়তো বাঙালির কাছে এতো বছর অধরা থেকে যেতেন না সুচিত্রা সেন।’ মনোবিদ সুবর্ণা সেনের কথায়, ‘যে সুচিত্রা সেন স্বপ্নসুন্দরী ছিলেন, তিনি বেশি বয়সে মানুষের সামনে এলে মানুষ সেই চেহারাটা কেমনভাবে নেবে, সে বিষয়ে হয়তো তিনি দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। নার্সিসিজমে এমনটা হয়।’ যে হাসপাতালে জীবনের শেষ ২৬ দিন ভর্তি ছিলেন সুচিত্রা, সেখানকার চিকিৎসকরাও মনে করছেন, নিজের যৌবনের রূপ নিয়ে নায়িকা এতোটাই মোহগ্রস্ত ছিলেন যে, প্রৌঢ়ত্বে কিংবা বৃদ্ধাবস্থায় তাকে কেউ চিনে ফেলুক, এমনটা কখনও চাইতেন না তিনি। এক চিকিৎসক বলেন, ‘টিভিতে উত্তম-সুচিত্রার সিনেমা দেখে তিনি মাঝে মাঝে বলতেন, ওটা তো আমি নই, সুচিত্রা সেন। এই মনোভাবটাই তাকে আটকে রেখেছিল বাড়ির মধ্যে।’ যদিও স্বাভাবিক মানসিক অবস্থায় এমন আচরণ স্বাভাবিক নয় বলেই মত চিকিৎসকদের। ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পার্থসারথী বিশ্বাসও এ বিষয়ে একমত। তার বক্তব্য, একই রকম আচরণ দেখা গিয়েছিল হলিউড সুন্দরী গ্রেটা গার্বোর ক্ষেত্রে। সম্ভবত গার্বোকে নিয়ে মার্কিন মনোবিদরা গবেষণা করেছেন। তার জীবনে ঠিক কি ঘটেছিল তা সবারই অজানা। তবু মনে হয়, এদেশেও সুচিত্রার স্বেচ্ছা নির্বাসন রীতিমতো ডাক্তারি গবেষণার বিষয়বস্তু- মূল্যায়ন পার্থসারথীর। তিনি মনে করেন, নার্সিসিজমের জেরে কোন মানসিক আঘাতের (নার্সিসিস্টিক ইনজুরি) প্রভাবেই তার মধ্যে ‘পজিটিভ বডি ইমেজ’-এর উপসর্গ তৈরি হয়েছিল। নিজের রূপলাবণ্যের মোহে আচ্ছন্ন হয়েই নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেছিলেন সুচিত্রা।

‘এখুনি এসো কাল যদি ভাল না থাকি’ by মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ফোনটা এলো বিকালে। রোববার, ৫ জানুয়ারি। বাইরের কোন কাজ রাখিনি সে দিন। বাড়িতে বসে আমার আগামী বইয়ের জন্য লিখছিলাম। হঠাৎ বেলভিউ থেকে ফোনে মুনমুন। বলল, ‘একটু কথা বলো।’
তারপরেই এক বিমুগ্ধ বিস্ময় আমার জন্য, ফোনের ওপারে তিনি, সুচিত্রা সেন! গলাটা হয়তো একটু ভারি, তবে কথার মিষ্টতা আগের মতোই। আমাকে বললেন, ‘চলে এসো, তোমাকে দেখতে চাই।’ জানতে চাইলাম, ‘কবে? আজই, না কাল?’ জবাব এলো, ‘এখুনি এসো। আজ ভাল আছি। কাল যদি ভাল না থাকি?’

ভাইপো অভিষেককে ডেকে নিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে পড়লাম। মনে অদ্ভুত এক অনুভূতি কাজ করছিল। এর আগে কোনদিন তাকে সামনে থেকে দেখিনি। পরিচয় যা, সেটা পর্দায় দেখে। এবং যে কোন বাঙালির মতোই উত্তম-সুচিত্রা জুটি সম্পর্কে চিরাচরিত আবেগের আমিও শরিক। সেই সুচিত্রার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি! সুচিত্রা সেন, আমাদের বিশ্বজয়ী দেবকন্যা!
ঠিক দু’দিন আগেই জানতে পারি, মহানায়িকা বেলভিউতে সুব্রত মৈত্রের চিকিৎসাধীন। সেদিনই নার্সিংহোমে খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। তবে তিনি যেহেতু দীর্ঘদিন স্বেচ্ছায় নিজেকে আড়ালে সরিয়ে রেখেছিলেন, তাই তার সেই ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়ে দেখা করার চেষ্টা করিনি। বাইরে থেকে মুনমুন, রাইমা, রিয়ার সঙ্গে কথা বলে ডাক্তার মৈত্র, ডাক্তার সমরজিৎ নস্কর, বেলভিউয়ের সিইও প্রদীপ টন্ডনের কাছে সব খবরাখবর নিয়ে ফিরে আসি। শুধু প্রার্থনা ছিল, ঈশ্বর ওনাকে দ্রুত সুস্থ করে তুলুন। এবার দেখা করার ডাক পাঠালেন ‘স্বপনচারিণী’ নিজেই।
মুনমুন, রাইমা, ডাক্তার মৈত্র আমাকে নিয়ে গেলেন। মনে হলো, যেন আমারই জন্য অপেক্ষা করছিলেন। প্রথম দেখা! সেই অনুভবটা ঠিক বলে বোঝানোর নয়। তার কেবিনে ঢুকতেই কাছে ডাকলেন। আমার হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে কত আদর করলেন, মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বললেন, ‘খুব ভাল থেকো।’ সেদিন আমারও সুযোগ হয়েছিল তাঁর হাতে-পায়ে-গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়ার। অনেকক্ষণ কথাও হয়েছিল। খানিকটা সময় তো একেবারে একান্তে আমরা দু’জনে। বেশ হাসিখুশি সুচিত্রা সেনকে দেখে ফিরে এলাম। আসার আগে বললেন, ‘আবার এসো কিন্তু।’
এরপরে ১৬ই জানুয়ারি পর্যন্ত তার নার্সিংহোমে থাকাকালীন আমি রোজ গিয়েছি। শুধু একদিন কলকাতায় ছিলাম না বলে যেতে পারিনি। বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যায় দেখা করে এসেছিলাম। শুক্রবার সকালে গিয়ে দাঁড়ালাম তার নিথর দেহের সামনে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
তাকে দেখতে গিয়ে কোনদিন ঘণ্টা দু’-তিন থাকতাম আমি। দ্বিতীয় যে দিন তার কাছে যাই, সেদিন তুলনামূলকভাবে শ্বাসকষ্ট একটু বেশি। চিকিৎসকেরা বললেন, আমি থাকতে থাকতেই তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। কেন জানি না, আমি কাছে গেলে তার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অর্থাৎ স্যাচুরেশন বেড়ে প্রায় স্বাভাবিক হয়ে যেত। এমন কথা ডাক্তার মৈত্র বৃহস্পতিবারও বলেছেন। মুনমুন বলত, এটা কি মমতা-ম্যাজিক! তবে সে সবের মধ্যে আমি যাচ্ছি না। আমার কাছে অনেক বড় পাওনা হলো তার সেদিনের একটি কথা: ‘তুমি আমার কে হও?’ কোন কোন সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যমে কোনভাবে একথাটি প্রকাশিত হয়ে যায় বিকৃত এক ইঙ্গিত দিয়ে। যাতে মনে হতে পারে, সুচিত্রা সেন সেদিন এতোই গুরুতর অবস্থায় ছিলেন যে, লোক চিনতে পারছিলেন না। খবর দেখে হেসেছিলাম। কাকে কি বোঝাব! কিন্তু আজ বলছি, এটা অতি বড় ভুল ব্যাখ্যা। আসলে স্নেহ-ভালবাসার কোন গভীর স্তর থেকে এমন কথা সেদিন তিনি বলেছিলেন, আমি সেটা জানি। তাই উত্তরে আমিও বলেছিলাম, ‘আমি তো আপনার পরিবারেরই একজন, একেবারে আপনজন।’ উনি হাসলেন। সারা মুখে শান্তির ছাপ।
সেই থেকে যত বার গিয়েছি, তিনি কখনও কথা বলতে না-পারলেও ইশারায় কাছে ডেকেছেন। হাত ধরে থেকেছেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছেন। চা-কফি খেতে বলেছেন। গত পরশুও যখন গেলাম মুনমুনের সামনেই তিনি হাত বাড়ালেন। হাতে সুচ ফুটিয়ে নানারকম ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা, টিউব-পাইপ ইত্যাদি লাগানোর জন্য তার হাতের বহু জায়গায় কালশিটের মতো হয়ে গিয়েছিল। আমি সেখানে হাত বুলিয়ে দিতাম। তিনি ভালবাসতেন সেটা। নার্সকে বলেছিলাম ভাল করে তিনবার মলম লাগিয়ে দিতে। জানতে চেয়েছিলাম, ‘খুব ব্যথা?’ তিনি বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, খুব।’ কিন্তু নিজের রোগ যন্ত্রণা নিয়ে কখনও কাউকে বেশি বিরক্ত করতে চাননি। অথচ মুনমুন-রাইমা-রিয়া এবং চিকিৎসকরা যে কি আন্তরিক পরিশ্রম করেছেন ওনাকে সুস্থ করে বাড়িতে ফেরানোর জন্য, তা আমি কাছ থেকে দেখেছি।
এই তো কয়েক দিন আগেই আমরা নিজেরা বলাবলি করলাম, তিনি নিজেই যখন আর হাসপাতালে থাকতে চাইছেন না, তখন রোববার বাড়ি নিয়ে যাওয়াই ভাল। দরকারে বাড়িতে হাসপাতালের মতো সব বন্দোবস্ত করে দেয়া যাবে। তার আগে একদিন খিচুড়ি খাওয়ার কথাও হলো। তিনি খিচুড়ি খেতে ভালবাসতেন। বললাম, এই শীতেই একদিন খিচুড়ি রান্না করে আপনার বাড়ি নিয়ে গিয়ে সবাই মিলে মজা করে খাবো। তিনি শুনে হেসেছিলেন। দুর্ভাগ্য, কোনটাই হলো না।
তার আরও একটি ভাল লাগার কথা জেনেছি। ‘হসপিটাল’ ছবিতে তার লিপে গীতা দত্তের গাওয়া ‘এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায়, এ কি বন্ধনে জড়ালে গো বন্ধু’ খুব প্রিয় ছিল তার। বলেছিলাম, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে একদিন আপনার বাড়ি গিয়ে ওই গানটি শুনিয়ে আসবো। সব কথাই এখন স্মৃতি! আমাদের সুন্দর বন্ধনে জড়িয়ে রেখে তিনি আকাশ মায়ের কোলে অন্য শান্তির নীড় খুঁজে নিলেন।
গত কয়েক দিন ধরেই তার শারীরিক অবস্থা খুব স্থিতিশীল ছিল না। সেটা চিকিৎসকেরা তো বটেই, আমরাও বুঝতে পারছিলাম। তবু চেষ্টার ত্রুটি হয়নি। শেষের ক’দিন কথা বিশেষ বলছিলেন না। এর মধ্যেই তার মন ভাল করার জন্য মজা করতে চাইতাম। খিচুড়ি খাওয়ানোর মতো হাল্কা প্রসঙ্গ তুলতাম। কিন্তু মনের কোণায় একটি দুশ্চিন্তা দানা বাঁধছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাবেলা নবান্ন থেকে বেরিয়ে বেলভিউ যাওয়ার পথেই ফোনে জানতে পারলাম তার অবস্থা বেশ খারাপ। ডাক্তার মৈত্র, ডাক্তার নস্কর সবাই ভেঙে পড়েছেন। তবু গিয়ে তাদের সবার সঙ্গে কথা বলে আমার মতো করে জোর দেয়ার চেষ্টা করলাম। তার পরে ঢুকলাম মহানায়িকার কেবিনে। তিনি চোখ খোলার চেষ্টা করছিলেন। হাত ধরলেন। চোখের কোণ বেয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে এলো। চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র তাকে বললেন, ‘চিকিৎসার কারণে আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। ক্ষমা চাইছি। আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’ আসলে মহানায়িকা নিজেও আর চাইছিলেন না কষ্ট পেতে। বরং স্বমর্যাদায় শান্তিতে তার অভীষ্টলোকে চলে যেতে চেয়েছিলেন দ্রুত। তাই রক্ত পরীক্ষার জন্য সুচ ফোটালে বিরক্ত হতেন। নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন বা বাইপ্যাপ লাগাতে গেলে হাত সরিয়ে দিতেন। ভেন্টিলেশনে না-দেয়ার কথাও জানিয়ে দিয়েছিলেন আগেই।
এ অবস্থায় আমরাও জেনে গিয়েছিলাম, আর বেশি সময় নেই। তিনি আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে যাবেন যে কোন সময়। দু’দিন আগে থেকেই তাই পুলিশ কমিশনার, চিকিৎসক সবার সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা করে রাখতে উদ্যোগী হই। সবটাই গোপনে। কারণ কাজটি বড় নির্মম। তবু কর্তব্য তো করতেই হবে। আমরা চাইনি তার শেষ ইচ্ছার কোনরকম অমর্যাদা করতে। তার পরিবার যেমন বলবেন, সেভাবে সব করাটাই লক্ষ্য ছিল। মহানায়িকা নিজেকে জনবিরলে রেখেছিলেন। তাই শেষযাত্রা ও অন্ত্যেষ্টির ব্যবস্থা আগে থেকেই এমনভাবে তৈরি ছিল যাতে তার মুখ প্রকাশ্যে না আসে।
সুচিত্রা মানে কি শুধুই রোমান্টিক নায়িকা? গত কয়েকদিন তাকে কাছ থেকে দেখার পরে আমি কিন্তু এক অন্য সুচিত্রা সেনকেও আবিষ্কার করেছি। রোমান্টিক সুচিত্রা আমাদের সবার মনের মণিকোঠায় চিরভাস্বর হয়ে আছেন, থাকবেন। আমরা যুগ যুগ ধরে তার সেই চাহনি, সেই প্রেমের আবেগ, সেই মিষ্টতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছি এবং থাকবো। কিন্তু রোমান্টিক সুচিত্রা সেনের মধ্যে আরও একজন আছেন। যিনি তেজস্বীতায় ভরপুর, প্রতিবাদী, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুচিত্রা সেন। তার অভিনীত ‘দেবী চৌধুরাণী’তে সুচিত্রার চরিত্রের এদিকটি এমনভাবে ধরা পড়েছে, যেটা কখনই অভিনয় বলে মনে হয়নি। আসলে নিজের মধ্যে সেই মানসিক দৃঢ়তা ছিল বলেই অতো প্রাণবন্ত হয়েছে তার অভিনয়। একই কথা বলবো হিন্দি ‘আঁধি’ ছবি সম্পর্কেও। সেখানেও ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রের দৃপ্ত দিকগুলো নিজের মানসিক গঠনের ছকে ফেলে জীবন্ত করে তুলেছেন সুচিত্রা সেন। আমাকে কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জায়গা থেকে সুচিত্রা সেন কি আপনাকে বিশেষ নজরে দেখেছেন’? সেই উত্তর তো আমার কাছে থাকার কথা নয়। যিনি জানেন, তিনি আজ অন্য লোকের যাত্রী। তবে এটা বলবো, আমাকে ডেকে পাঠানোর আগে তিনি নিশ্চয় আমার কাজের ধারা সম্পর্কে একটু আধটু জেনেছিলেন। আমার মাথায় তার আশীর্বাদের হাত তো আমি পেয়েছি! সর্বোপরি তার মনের দৃঢ়তা ছিল বলে মৃত্যু সম্পর্কেও এতো উদাসীন হতে পেরেছেন তিনি।
আর ছিল ধর্মের প্রতি অগাধ আস্থা। তিনি রামকৃষ্ণ মঠের দীক্ষিত ছিলেন, সবাই জানি। কিন্তু তার প্রতিদিনের কতটা সময় তিনি ধর্মাচরণে কাটাতেন, নিজের ঠাকুরঘরে একান্তে পূজা-অর্চনায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখতেন সেটা বলার মতো। এই অসুস্থতার মধ্যেও নার্সিংহোমে মঠ থেকে ফুল ও চরণামৃত এসেছে তার জন্য। তার শেষযাত্রার আগে এসেছেন মঠের সাধুরা।
তবে ‘মুডি’ ছিলেন খুব। মেজাজ খুশি থাকলে একেবারে হাসির ধারা। আবার কোন কারণে মুড ভাল না থাকলে বা বিরক্ত হলে মুখের রেখায় চরম অভিমানের প্রকাশ। আমি নিজেই এটা দেখেছি। যদিও সৌজন্যের মাত্রা কখনও ছাড়তেন না। মৃত্যুর দু’দিন আগেও আমাকে হাত তুলে নমস্কার জানাতে ভোলেননি। আর ফিটফাট ছিলেন এতোটাই যে, ঠোঁটের ক্রিমটাও ঠিকঠাক মাখিয়ে দিতে হতো।
সব শেষে সেই অনিবার্য প্রশ্ন। কেমন দেখতে ছিলেন এখনকার সুচিত্রা সেন? কেমন চেহারা ছিল তার? এই লেখার সেই গোড়ার প্রসঙ্গে ফিরি। আমাদের সবার স্বপ্নের নায়িকাকে প্রথম দেখতে যাওয়ার দিনে আমার মনেও এই কৌতূহল যে ছিল না, বলি কি করে! আর গিয়ে কি দেখলাম? শুনলে আশ্চর্য হবেন, ওনার চেহারা একেবারে আগের মতোই আটোসাঁটো। বয়স ছাড়া ভাঙনের ছাপ নেই। কারণ, যারা মাথা উঁচু করে চলেন, তারা তো ভাঙতে জানেন না। তার মরদেহের সামনে দাঁড়িয়েও সেই কথাটি বারবার মনে হচ্ছিল। একেবারে শান্ত, সুন্দর মুখ, যেন নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে রয়েছেন।
নিজস্বতায় অনড় থেকে এই চলে যাওয়া তাকে চিরজয়ী করে রাখল। আমরা শুধু সেই জয়ের সাক্ষী থাকলাম।
আনন্দবাজার পত্রিকার সৌজন্যে

রাষ্ট্রীয় সম্মানে শেষকৃত্য সম্পন্ন- চলে গেলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন by অমর সাহা @কলকাতা

Friday, January 17, 2014

দীর্ঘ ২৫ দিন লড়াই করে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। আজ শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল বেলভিউতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

বিকেল পাঁচটার দিকে ঐতিহাসিক কেওড়াতলা মহাশ্মশানে রাষ্ট্রীয় সম্মানে সুচিত্রা সেনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁর মরদেহ দাহ করা হয় চন্দন কাঠে। একমাত্র কন্যা মুনমুন সেন তাঁর মুখাগ্নি করেন। দেড়টার দিকে শ্মশানে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কলকাতা পুলিশ মহানায়িকাকে ‘গান স্যালুট’ দিয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করেন। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রী, পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। শ্মশান চত্বরে ছিল কড়া নিরাপত্তা। শ্মশানের বাইরে ছিল ভক্তদের ভিড়। প্রিয় নায়িকাকে সেখান থেকেই ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানান তাঁরা।

দুপুরে সুচিত্রা সেনের মরদেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বালিগঞ্জের বাসভবনে। সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।  রবীন্দ্র সদনে কিংবদন্তি সুচিত্রা সেনের ছবি রাখা হয়। বেলা দুইটা থেকে সেখানে ভক্তেরা শ্রদ্ধা জানান।

গত ২৩ ডিসেম্বর ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল বেলভিউয়ে ভর্তি হন সুচিত্রা সেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। একমাত্র কন্যা অভিনেত্রী মুনমুন সেন, নাতনি রাইমা ও রিয়া সেনসহ অগণিত ভক্ত ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুচিত্রা সেনের চিকিৎসায় সুব্রত মৈত্রের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে। চিকিৎসকেরা জানান, গত তিন দিন তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে অবনতি ঘটে। এরপর আজ সকালে তিনি হূদরোগে আক্রান্ত হন।

সুচিত্রা সেনের জন্ম ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল, বাংলাদেশের পাবনায়। শৈশব কেটেছে সেখানেই। বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা-বাবার পঞ্চম সন্তান ছিলেন সুচিত্রা। ১৯৪৭ সালে কলকাতার বিশিষ্ট বাঙালি শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দীবানাথ সেনের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। তাঁদের ঘরে একমাত্র সন্তান মুনমুন সেন।

১৯৫২ সালে তিনি চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন। প্রথম ছবি করেন শেষ কোথায়। তবে ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে সাড়ে চুয়াত্তর ছবি করে সাড়া ফেলে দেন চলচ্চিত্র অঙ্গনে। সুচিত্রা সেন বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি দেবদাস (১৯৫৫)। সুচিত্রা সেন ১৯৭৮ সালে প্রণয় পাশা ছবি করার পর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যান। এরপর থেকে তিনি আর জনসমক্ষে আসেননি। মাঝে একবার ভোটার পরিচয়পত্রে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে ছবি তুলতে ভোটকেন্দ্রে যান। সুচিত্রা সেন ছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ভক্ত। একবার তিনি গোপনে কলকাতা বইমেলায় গিয়েছিলেন। বলিউড-টালিউডের বহু পরিচালক সুচিত্রা সেনকে নিয়ে ছবি করতে চাইলেও তিনি এতে সম্মত হননি। এমনকি দেশ-বিদেশের কোনো পরিচালক বা অভিনেতা বা অভিনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও দেননি তিনি। সেই থেকে তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালেই থেকে যান। যদিও তাঁর বাসভবনে তিনি কেবল কথা বলেছেন তাঁর একমাত্র মেয়ে মুনমুন সেন এবং দুই নাতনি রিয়া ও রাইমার সঙ্গে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুচিত্রা সেনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন মুনমুনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে। এ সময় শেখ হাসিনা সুচিত্রা সেনের দ্রুত আরোগ্যও কামনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েক দিন বেলভিউ হাসপাতালে গিয়ে সুচিত্রা সেনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সুচিত্রা সেন ১৯৬৩ সালে মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সাত পাকে বাঁধা ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান।

১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী পান। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাংলাবিভূষণ সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁকে। ২০০৫ সালে সুচিত্রা সেনকে ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব করা হলে সুচিত্রা সেন দিল্লিতে গিয়ে ওই সম্মান গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সুচিত্রা সেনের ছবি
সুচিত্রা সেনের প্রথম ছবি শেষ কোথায়। ১৯৫২ সালে ছবিটি নির্মিত হলেও তা আর মুক্তি পায়নি। ১৯৫৩ সালে অভিনয় করেন সাত নম্বর কয়েদি ছবিতে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭৮ এই ২৬ বছরে তিনি ৬২টি ছবিতে অভিনয় করেন। ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে তিনি প্রথম ছবি করেন সাড়ে চুয়াত্তর। এ ছবিটি বক্স অফিস হিট করে। সুচিত্রা সেনের অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে: অগ্নি পরীক্ষা (১৯৫৪), গৃহ প্রবেশ (১৯৫৪), ঢুলি (১৯৫৪), মরণের পরে (১৯৫৪), দেবদাস (১৯৫৫-হিন্দি), শাপমোচন (১৯৫৫), সবার উপরে (১৯৫৫), মেঝ বউ (১৯৫৫), ভালবাসা (১৯৫৫), সাগরিকা (১৯৫৬), ত্রিযামা (১৯৫৬), শিল্পী (১৯৫৬), একটি রাত (১৯৫৬), হারানো সুর (১৯৫৭), পথে হল দেরী (১৯৫৭),জীবন তৃষ্ণা (১৯৫৭), চন্দ্রনাথ (১৯৫৭), মুশাফির (১৯৫৭-হিন্দি), রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত (১৯৫৮), ইন্দ্রানী (১৯৫৮), দ্বীপ জ্বেলে যাই (১৯৫৮), চাওয়া পাওয়া (১৯৫৯), হসপিটাল (১৯৬০), বোম্বাই কা বাবু (১৯৬০-হিন্দি), সপ্তপদী (১৯৬১), সাত পাকে বাঁধা (১৯৬৩), উত্তর ফাল্গুনী (১৯৬৩), মমতা (১৯৬৬), গৃহদাহ (১৯৬৭), কমললতা (১৯৬৯), মেঘ কালো (১৯৭০), ফরিয়াদ (১৯৭১), আলো আমার আলো (১৯৭২), হার মানা হার (১৯৭২), দেবী চৌধুরাণী (১৯৭৪), শ্রাবণ সন্ধ্যা (১৯৭৪), প্রিয় বান্ধবী (১৯৭৫), আঁধি (১৯৭৫-হিন্দি), দত্তা (১৯৭৬) এবং সর্বশেষ প্রণয়পাশা (১৯৭৮)।

মিস ওয়ার্ল্ড হতে চায় লিঙ্গান্তরকারী বাংলাদেশী

Friday, January 10, 2014

“আমি সুন্দরী নারী এবং এজন্য মানুষের উচিত আমাকে সম্মান করা। মিস ওয়ার্ল্ড হওয়া আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্নগুলোর একটি। বড় হওয়ার সময়েই আমার সবসময় মনে হতো আমি ভুল শরীরের ফাঁদে পড়েছি, তাই লিঙ্গান্তর করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
সৃষ্টিকর্তা ও নিজের ওপর আমার বিশ্বাস আছে। আমার মন যা চায় আমি তাই করতে পারি।”- সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেছেন লিঙ্গান্তর করা ২৩ বছর বয়সী গ্ল্যামার মডেল অ্যামেলিয়া মালতেপে।

বাংলাদেশের এক রক্ষণশীল মুসলমান পরিবারে জন্ম অ্যামেলিয়া মালতেপের। তার আগের নাম আদেশ। ২০০৯ সালে পড়াশুনার জন্য কানাডার টরেন্টোতে যান অ্যামেলিয়া। মডেলিংয়ের পাশাপাশি বর্তমানে বিজনেস অ্যাকাউন্টিং নিয়ে পড়ছেন। 

ছোটবেলা থেকেই সুন্দর চোখের অধিকারী অ্যামেলিয়া। তিনি জানান, তার চোখই তার সামনে লিঙ্গান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়।  লিঙ্গান্তর করার পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অ্যামেলিয়া বলেন, “এটা ছিল আমার জন্য অসাধারণ একটা মুহূর্ত। আমার মনে হয়েছে আমি যা ছিলাম শেষ পর্যন্ত তাই হতে সক্ষম হয়েছি।”

অ্যামেলিয়া মেয়েদের মতো চুল পাওয়ার জন্য ২০০০ পাউন্ড ব্যয় করেছেন। হরমোন পরিবর্তন করে লিঙ্গান্তর করার দুই মাস পর অ্যামেলিয়ার শরীরে স্তন প্রতিস্থাপন করা হয়। এতে অ্যামেলিয়ার ব্যয় হয়েছে ৬০০০ পাউন্ড। 

ভবিষ্যতে মডেলিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চান অ্যামেলিয়া। এরইমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে মডেলিংও করেছেন তিনি। লিঙ্গান্তর করা কানাডিয়ান মডেল জেনা টালাকোভাকে নিজের অনুপ্রেরণা মনে করেন অ্যামেলিয়া। লিঙ্গান্তর করে সাধারণত সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া যায় না।

এ নিয়মের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছর ধরে আন্দোলন করছিলেন জেনা। বর্তমানে কানাডায় লিঙ্গান্তরকারীদের মিস ওয়ার্ল্ডে প্রতিযোগিতা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কানাডার স্থানীয় পত্রিকা টরেন্টো সান এ অ্যামেলিয়ার মডেলিংয়ের ছবি প্রকাশ হওয়ার পর তাকে নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলা করারও প্রস্তুতি নিয়েছিলেন কয়েকজন রাগান্বিত পাঠক।  

বর্তমানে প্রেমিক চার্লস ডোবাকের সঙ্গে বসবাস করছেন অ্যামেলিয়া। ২৭ বছর বয়সী চার্লস অ্যামেলিয়ার ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট।

Thursday, January 2, 2014

নিজের ভুলের জন্য মায়ের কাছে ক্ষমা চাইলেন আলোচিত অভিনয়শিল্পী সাদিয়া জাহান প্রভা। আরটিভির ‘আমি আর মা’ অনুষ্ঠানে মায়ের কাছে ক্ষমা চান তিনি। সম্প্রতি অনুষ্ঠানটির দৃশ্যধারণের কাজ শেষ হয়েছে।

প্রভা বলেন, ‘সন্তান যে ভুলই করুক, মা সব সময় আগলে রাখেন। আমার মা-ও এর ব্যতিক্রম নন। আমার সব বিপদে মা পাশে থেকে উদ্ধার করেছেন। জুগিয়েছেন সাহস।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ মাত্রই ভুল করে। আমিও জীবনে কিছু ভুল করেছি। যদি এ ভুলগুলো বাবা-মা ক্ষমা করে দেন, তাহলে ভাবব সবাই আমাকে ক্ষমা করেছেন। আর এ জন্য মায়ের কাছে ক্ষমা চাই।’

আরটিভির ‘আমি আর মা’ অনুষ্ঠানের এবারের পর্বে অতিথি হয়েছেন অভিনেত্রী প্রভা ও তাঁর মা রাবেয়া রহমান। অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেছেন সোহেল রানা বিদ্যুত্। তিনি বলেন, ‘সাধারণ দর্শকদের কাছে মিডিয়া জগতের মানুষেরা স্বপ্নের মতো। তাঁরা যখন টিভি বা সিনেমায় তাঁদের সেই প্রিয় মানুষটিকে দেখেন, তখন প্রিয় মানুষটির সম্পর্কে নানান তথ্য জানার ইচ্ছা পোষণ করেন। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষদের তাঁদের সেই সব পছন্দের তারকার নানান অজানা তথ্য জানানোর চেষ্টা করি।’

তানিয়া আহমদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের এই পর্বে প্রভার মা রাবেয়া রহমান জানাবেন ছোটবেলা থেকে প্রভার বড় হয়ে ওঠার গল্প। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠানে থাকবে তাঁর  ছোটবেলার ছবি ও ভিডিও। ‘আমি আর মা’ অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে ৩ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে।

নেশালাগা ডিজে ড্যান্সে সিলেটের থার্টিফার্স্ট

Wednesday, January 1, 2014

থার্টিফার্স্টে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছিল সিলেটের তরুণ-তরুণীরা। বাংলোবাড়ি, হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে ভোররাত পর্যন্ত চলে থার্টিফার্স্টের নেশালাগা ডিজে ডান্স। অনেকেই হারিয়ে যান গোপন অভিসারে।
ঢাকার ডিজেরা এসে মোহময় করে তোলে থার্টিফার্স্টের জলসাঘর। মঙ্গলবার সন্ধ্যা নামতেই সিলেটে থার্টিফার্স্টের সুর বেজে ওঠে। নগরীর জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, নয়াসড়ক সহ বেশ কিছু এলাকায় তরুণ-তরুণীদের আড্ডা আর আনাগোনা বেড়ে যায়। ওই সব এলাকার রেস্টুরেন্টগুলোতে সন্ধ্যা রাতেই চলে পার্টির আয়োজন। তবে, সে আয়োজন কেবলই খাওয়া-দাওয়া আর আড্ডার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। জিন্দাবাজারে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস যোগে এসে ঢাকার ডিজেরা নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে যায়। আয়োজক লন্ডন প্রবাসীরা এ সময় তাদের নিয়ে মার্কেটিং ও রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করে। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে নীরব হতে থাকে চারদিক। সাড়ে ১১টার দিকে, পুলিশ, র‌্যাবসহ যৌথবাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় নেমে টহল দিতে থাকেন। একই সঙ্গে তারা নগরীর সব ক’টি পয়েন্টে তল্লাশি শুরু করেন। এ অবস্থায় রাত ১২টার মধ্যে নীরব হয়ে পড়ে গোটা নগর। তবে, পুলিশের এই ধরপাকড় থার্টিফার্স্টের বর্ণিল আয়োজনে কোন বাধা হয়নি। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় একটি বাংলো বাড়িতে থার্টিফার্স্টের বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে ঢাকার ডিজে গার্লরা ছিল বিশেষ আকর্ষণ। সম্ভবত এই আয়োজনটি ছিল সবচেয়ে বড় আয়োজন। এখানে সিলেটের রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে প্রশাসনের অনেক কর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে, সেখানে মিডিয়া কর্মীদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। ওই আয়োজনে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় তরুণী উপস্থিত ছিল। ওই এলাকায় আরও বেশ কয়েকটি বাংলোবাড়িতে চলে থার্টিফার্স্টের আয়োজন। তবে, চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি থাকায় থার্টিফার্স্টের উন্মাদনা রাস্তায় ছড়ায়নি। আর যারা রাত ১১টার মধ্যে গিয়েছিল তারা রাতভর থার্টিফার্স্ট উন্মাদনায় মেতে থাকে। এসব আয়োজনে পানীয়ের নেশায় বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠে সবাই। অনেক আয়োজনে নেশায় টলমলে তরুণীদের নিয়ে প্রবাসী আয়োজকরা হারিয়ে যায় অজানায়। নগরীর বিমানবন্দর এলাকার কয়েকটি রেস্তরাঁয় ছিল থার্টিফার্স্টের আয়োজন। ফ্যাশন শো’র নামে আয়োজন করা হলেও রাত ১টার পর বদলে যায় পরিস্থিতি। তরুণ-তরুণীরা উন্মাতাল ডান্সে মাতিয়ে তোলে থার্টিফার্স্টের জমকালো আয়োজন। বিমানবন্দর এলাকার আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবার প্রবাসীদের বেশির ভাগই ওই এলাকার বাংলোবাড়ি ও বাগানের রেস্ট হাউজগুলোতে থার্টিফার্স্টের আয়োজন করে। এসব আয়োজনে প্রশাসনের ঝুটঝামেলা থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন থানার সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা ও শাসকদল আওয়ামী লীগের নেতাদের দাওয়াত করে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তারা উপস্থিত থাকায় বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেন থার্টিফার্স্টের ডিজেরা। নগরীর সুবিদবাজারের দু’টি চাইনিজ রেস্টুরেন্টেও ছিল থার্টিফার্স্টের বর্ণাঢ্য আয়োজন। ফ্যাশন শো’র নামে মান্ডারিন ও ফ্লোবাতে আয়োজন করা হয় থার্টিফার্স্ট নাইটের। কেবল নির্ধারিত অতিথিরা এই দু’টি শো’তে যোগ দেন। অনুমতি ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমনকি আয়োজনের ছবি তোলাও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। এই দু’টি রেস্টুরেন্টে থার্টিফার্স্টের আয়োজনে সিলেটের মডেল কন্যারাই ছিল মূল আকর্ষণ। পালাক্রমে দু’টি হোটেলেই সিলেটের ডিজে মডেলরা মাতিয়ে রাখে। রাত একটার পর পানীয়ের ছড়াছড়ি শুরু হয়। এ কারণে মাতাল ডিজে ও তাদের আয়োজকদের কারণে হোটেল কর্তৃপক্ষ একপর্যায়ে বিব্রত বোধ করে। দু’টি হোটেলে আয়োজনে নেতৃত্বে ছিলেন সিলেটের ডিজে সামিনা ইসলাম মৌ। সহযোগী ছিলেন মাহি ও শোভা। এই তিনজন মিলে ১০ থেকে ১২ জনের ডিজে মডেলদের দিয়ে মাতিয়ে রাখেন দু’টি প্রোগ্রাম। রাত ২টার দিকে ফ্লোবা রেস্টুরেন্টে কিছুটা বাঁধভাঙা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মৌ ও শোভা টালমাটাল হয়ে ওঠেন। আয়োজকদের নিয়ে মেতে ওঠেন তারা। এই অবস্থায় আসরও স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত নেশালাগা দুই ডিজেকে পাঠিয়ে দেয়া হয় অন্যত্র। পরে ভোররাতের দিকে তাদের পরিবারের স্বজনরা গিয়ে তাদের বাসায় নিয়ে যায়। আর মাহিসহ কয়েকজন ফ্লোবার অনুষ্ঠান মাতিয়ে রাখেন। এদিকে, নগরীর পর্যটন এলাকাগুলোতে ছিল প্রবাসীদের জন্য বিশেষ ডিজে আয়োজন। এই ডিজে অনুষ্ঠানমালা রাতভর জমিয়ে রাখে ঢাকার ডিজে তরুণীরা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মিডিয়া মো. আইয়ুব জানিয়েছেন, পুলিশ উচ্ছৃঙ্খলতার কোন অভিযোগ পায়নি। তবে সতর্ক ছিল।

প্রথম স্ত্রী অনন্যার বাসায় পুলিশ পাঠালেন আরফিন রুমি

Friday, December 27, 2013

প্রথম স্ত্রী অনন্যার বাসায় পুলিশ পাঠালেন হালের অন্যতম আলোচিত ও সমালোচিত সংগীত শিল্পী আরফিন রুমি। জানা গেছে, আজ দুপুরে চার সদস্যের পুলিশের একটি টিম অনন্যার বাসায় যায়। সঙ্গে নিয়ে যায় সার্চ ওয়ারেন্ট।
জানানো হয়, রুমি ও অনন্যার মধ্যে যে আপসনামা স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা উদ্ধারে তারা এসেছে। পরে আপসনামা ছাড়াই চলে যায় পুলিশ টিম। বলে যায় আপসনামা না পেলে অনন্যার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে। এ প্রসঙ্গে অনন্যা বলেন, ২৪শে ডিসেম্বর আদালতে শুনানির পর কোনো রকম ইতিবাচক সাড়া দেয়নি রুমি। আদালতে সেদিন জানানো হয়েছিল আমাকে ও সন্তান আরিয়ানকে নিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চায় সে। এজন্য কিছু শর্তও রাখে রুমি। এমনকি সেদিন বেশ কয়টি অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় এ বিষয়ে খবর প্রকাশ হয়। যেখানে জানানো হয় একে অন্যের শর্ত মেনে নতুন করে জীবন শুরু করতে যাচ্ছে রুমি-অনন্যা। অথচ আমাদের বাসায় বংশাল থানা পুলিশের একটি টিম এসে হাজির। রুমি আমাদের বিরুদ্ধে আপসনামা উদ্ধারের মামলা করেছে। যা আমাকে সত্যিই অবাক করেছে। রুমি এবং তাদের পরিবার জানিয়েছে, যে আপসনামা করা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যে। এমনকি আমরা নাকি তাকে জোর করে ওই চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করিয়েছিলাম। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে অনন্যা আরও বলেন, গত ১২ই অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করার পর রুমি ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাদের পরিবার আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। দেয়া হয় হুমকি-ধামকি। একপর্যায়ে উপায় না দেখে আমাদের বাসায় এসে অনুনয় বিনয় করতে থাকে তার মা ও ভাবি। তখন আমাদের মধ্যে এ আপসনামাটি হয়। মূলত এর উপর ভিত্তি করেই আদালতে জামিনের দরখাস্ত করেন রুমির উকিল। তবে এটাও জানানো হয়, চুক্তি অনুযায়ী শর্ত না মানলে আমি আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবো। স্বাক্ষরটি রুমির কাছ থেকে জোর করে আদায় করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে অনন্যা বলেন, প্রশ্নই উঠে না। বরং, রুমির পরিবার অনেক অনুনয় বিনয় করে আমাদের বাসায় আপসের প্রস্তাব নিয়ে আসেন। এমনকি এসব শর্তাবলি লেখার সময় সিডি চয়েজের এমদাদ, প্রিন্স, কাজী শুভ, ইলিয়াস, খেয়া, আরমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রুমির ব্যান্ড দলের মামুন, লিটন ও শান্তরাও ছিলেন। এরাও এ শর্ত সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। এছাড়া এ মুহূর্তে রুমির এ কথা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ, আদালতে বিগত শুনানিগুলোতে রুমির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে শিগগিরই সে শর্তগুলো পূরণ করবে। উল্লেখ্য, এ আপসনামায় লেখা ছিল, সন্তান আরিয়ানের ভরণপোষণের জন্য রুমি অনন্যাকে ২০ লাখ টাকা প্রদান করবে, যা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখা হবে। এছাড়া অনন্যার সঙ্গে সে আর খারাপ ব্যবহার করবে না। অধিকার দেবে স্ত্রীর প্রকৃতি মর্যাদার। এ বিষয়ে জানার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন করা হয় রুমির মুঠো ফোনে। কিন্তু রিং হওয়ার পরও মুঠোফোনের অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি।

হৃতিক-সুজান বিচ্ছেদের নেপথ্যে

Friday, December 20, 2013

চার বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর ২০০০ সালের ২০ ডিসেম্বর গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন হৃতিক রোশন ও সুজান রোশন।
সবকিছু ঠিক থাকলে আজ তাঁদের বিয়ের ১৩ বছর পূর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৩তম বিয়ে বার্ষিকীর ঠিক এক সপ্তাহ আগে ১৩ ডিসেম্বর হৃতিক জানালেন, তিনি ও সুজান বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছেন। তবে কি ১৩ সংখ্যাটিই কাল হয়ে দাঁড়াল হৃতিক-সুজানের  সুখী দাম্পত্য জীবনে! বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা জানালেও, এর পেছনের কারণ সম্পর্কে হৃতিক কিংবা সুজান কেউই স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। কিন্তু এত বড় ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটন না করে কী বসে থাকতে পারেন সংবাদকর্মীরা! সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে হৃতিক-সুজান বিচ্ছেদের নেপথ্যে সম্ভাব্য কয়েকটি কারণের কথা জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া।

২০০০ সালের জানুয়ারি মাসে ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে সফল অভিষেক হয় হূতিকের। একই বছরের ডিসেম্বরে সুজানকে ভালোবেসে বিয়ে করেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে বলিউডের অন্যতম সফল ও সুখী দম্পতি হিসেবে উচ্চারিত হয়েছে তাঁদের নাম। হৃতিক-সুজান দাম্পত্যে প্রথম অশান্তির ঢেউ ওঠে ২০১০ সালে। সে বছর মুক্তি পাওয়া ‘কাইটস’ ছবিতে সহ-অভিনেত্রী মেক্সিকান মডেল ও অভিনেত্রী বারবারা মোরির সঙ্গে হূতিকের সখ্যের খবর চাউর হলে দূরত্ব তৈরি হয় হৃতিক ও সুজানের মধ্যে। ধারণা করা হচ্ছে, হৃতিক-বারবারা সখ্যের চূড়ান্ত পরিণতি হিসেবেই বিচ্ছেদের মতো কঠিন পথ বেছে নিয়েছেন সুজান।

অবশ্য বারবারার সঙ্গে সখ্যের আগে কারিনা কাপুরের সঙ্গেও হূতিকের প্রেমের গুজব চাউর হয়েছিল। ২০০১ সালের ২৭ জুলাই মুক্তি পাওয়া ‘ইয়াদে’ ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে বিবাহিত হূতিকের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন কারিনা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়, প্রায় এক বছর হূতিকের প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন কারিনা। কিন্তু বিবাহিত হওয়ায় কারিনার প্রেমে সাড়া দেননি হৃতিক রোশন।

লক্ষণীয় বিষয় হলো, ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ম্যায় প্রেম কি দিওয়ানি হুঁ’ ছবিতে সর্বশেষ একসঙ্গে অভিনয় করেন হৃতিক-কারিনা। যথেষ্ট দর্শক চাহিদা থাকার পরও আর কোনো ছবিতেই এই জুটিকে চুক্তিবদ্ধ করাতে পারেননি কোনো নির্মাতা। দীর্ঘ ১০ বছর পর সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন প্রভাবশালী নির্মাতা করণ জোহর। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ‘শুদ্ধি’ ছবিতে হৃতিক-কারিনা জুটির অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছিলেন করণ। তবে এখন কারিনার পরিবর্তে ছবিটিতে দীপিকাকে নেওয়ার চেষ্টা করছেন করণ জোহর।

বেশ কিছুদিন ধরেই হৃতিক-সুজান বিচ্ছেদের গুঞ্জন চলছিল। শুরুতে অস্বীকার করলেও চলতি মাসের ১৩ তারিখে বিচ্ছেদের খবর নিশ্চিত করেন হৃতিক। এরপর রোশন পরিবারের কাছের একটি সূত্র জানায়, চার মাস ধরে রোশন পরিবার থেকে দূরে আছেন সুজান। তিনি পেশায় একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার। সম্প্রতি তিনি নিজের একটি বুটিক হাউস খুলেছেন। বুটিক হাউসের কাছেই মুম্বাইয়ের ভারসোভা এলাকায় দুই ছেলে রিহান ও রিদানকে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকছেন সুজান। এদিকে হৃতিক ও সুজানের বিচ্ছেদের পেছনে বলিউডের অভিনেতা অর্জুন রামপালের হাত রয়েছে বলে খবর চাউর হয়েছে। অবশ্য বিষয়টিকে অস্বীকার করেছেন অর্জুন।

এ প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘হৃতিক ও সুজান দুজনই আমার খুব কাছের বন্ধু। কাছের কেউ যখন বিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়, তখন এমনিতেই মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়। এই মুহূর্তে জীবনের কঠিনতম সময় পার করছে হৃতিক ও সুজান। এ অবস্থায় অযথা ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানোর কোনো মানে হয় না। তাঁদের বিচ্ছেদে আমার সম্পৃক্ততা নিয়ে আজেবাজে কেচ্ছা-কাহিনি রটানো হচ্ছে। এটা আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে। হৃতিক-সুজানের এই কঠিন সময়ে আমি ও আমার স্ত্রী মেহের সব রকম সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই। বরাবরের মতো এখনো আমরা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করছি।’ এদিকে অর্জুনের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন সুজানও। তিনি বলেছেন, ‘হৃতিক ও আমার খুবই কাছের একজন বন্ধু অর্জুন। আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন অনেক বেশি দৃঢ়। অযথাই কাউকে দোষারোপ করার বিষয়টি একদমই অনুচিত একটি কাজ।’

 বিচ্ছেদের কারণ জানতে চাইলে সুজানের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘অনেক সময় কোনো কারণ ছাড়াই অনেক কিছু ঘটে যায়। পরিস্থিতিই মানুষকে বাধ্য করে অপ্রত্যাশিত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে। বিচ্ছেদের কারণ নিয়ে আমি স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাই না। কারণ আমি নিজেও একজন মা ও মেয়ে।’ হৃতিক-সুজানের বিচ্ছেদ নিয়ে সুজানের বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা সঞ্জয় খানের মন্তব্য, ‘আর দশজন সাধারণ দম্পতির মতো হৃতিক-সুজানেরও ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা ছিল। হৃতিক সুপারস্টার বলে তার কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা থাকবে না, তা তো নয়। তারা দুজনই বুদ্ধিমান এবং চমত্কার ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তাদের বিচার-বিবেচনায় যা ঠিক মনে হয়েছে, সেটাই তারা করেছে।’

ম্যান্ডেলার জন্য শোকাহত তারকাজগৎ

Friday, December 6, 2013

বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার মৃত্যুতে যখন শোকাহত সারাবিশ্ব, তখন সেই শোকের মিছিলে যোগ দিয়েছেন বিনোদনজগতের শিল্পীরাও।
সংগীতশিল্পী বনো, অভিনেতা মরগ্যান ফ্রিম্যান থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সব বয়সী শিল্পীরা জানিয়েছেন ম্যান্ডেলার প্রতি তাদের শেষ শ্রদ্ধা।

আলিশাকে নিয়ে ৫ ছবি

Monday, December 2, 2013

একুশে পদকপ্রাপ্ত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসা আলোচিত মডেল আলিশাকে নিয়ে ৫ ছবি নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে নতুন প্রযোজনা সংস্থা কার্নিভাল মোশন পিকচার্স।
এর স্বত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন মুরাদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম ছবিটি নির্মাণ করছেন চাষী নজরুল ইসলাম। ছবির নাম ‘অন্তরঙ্গ’। আজ সন্ধ্যায় এফডিসির ৩ নম্বর ফ্লোরে মহরতের মাধ্যমে ‘অন্তরঙ্গ’ ছবির শুটিং শুরু করবেন পরিচালক। সেই সঙ্গে ছবি নির্মাণে যাত্রা শুরু করবে কার্নিভাল মোশন পিকচার্স। এফডিসিতে একটি ক্লাব ড্যান্সের শুটিং শেষে পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম ইউনিট নিয়ে চলে যাবেন কক্সবাজারে। এ ছবিতে আলিশার নায়ক ইমন। একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করবেন দিতি। ইমন ও আলিশা চাষী নজরুল ইসলামের ‘ভুল যদি হয়’ ছবির মাধ্যমে প্রথম জুটি বাঁধেন। এ ছবিটির কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। কার্নিভাল মোশন পিকচার্সের দ্বিতীয় ছবিটি পরিচালনা করবেন শাহিন-সুমন। এ ছবির নাম ‘মিয়া বিবি রাজি’। ছবিতে আলিশার নায়ক সাইমন। আরও থাকবেন সাদেক বাচ্চু, শাকিলা, মিশা সওদাগর এবং এটিএম শামসুজ্জামান। কার্নিভাল মোশন পিকচার্সের আরও দুটি ছবি পরিচালনা করবেন সোহানুর রহমান সোহান ও জাকির হোসেন রাজু। পাঁচ নম্বর ছবিটি ইফতেখার চৌধুরীর পরিচালনা করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউরোকোলার বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে আলোচনায় চলে আসা আলিশা প্রধানের স্বপ্নজুড়ে কেবল সিনেমা। ভাল মানের ছবিতে নতুনরূপে নিজেকে উপস্থাপন করে চলচ্চিত্র শিল্পে জায়গা করে নেয়ার জন্য মনেপ্রাণে প্রস্তুত আলিশা বলেন, একসঙ্গে পাঁচ ছবির ঘোষণা যে কোন শিল্পীর জন্য বিশাল একটা ব্যাপার। আমার মতো নতুনের জন্য তো আরও বড় একটা সৌভাগ্যের বিষয়। আমি কার্নিভাল মোশন পিকচার্সের প্রতি কৃতজ্ঞ যে তারা আমাকে এতো বড় সুযোগ দিয়েছেন। আমি আমার সর্বোচ্চ মেধা দিয়ে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর মাধ্যমে আমার স্বপ্নের চলচ্চিত্র শিল্পে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমার বিশ্বাস আমি তা পারবো।

 চতুর্থ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘স্বপ্নঘুড়ি’

Monday, December 13, 2010

গামী বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে ‘৪র্থ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব বাংলাদেশ’। উৎসবের জন্য নির্বাচিত হয়েছে বৃত্তা রায় দীপার কাহিনি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় নির্মিত টেলিছবি ‘স্বপ্নঘুড়ি’। ১৩-১৪ বছরের একটি ছেলের স্বপ্নের নানা বিষয় এবং পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে নির্মিত হয়েছে টেলিছবি স্বপ্নঘুড়ি।
টেলিছবির কাহিনিতে দেখা যাবে ১৩-১৪ বছরের বাদশা গ্রামের অবারিত মাঠে ঘুড়ি উড়িয়ে, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে দিন কটিয়ে দেয়। কিন্তু হঠাৎ ঋণের দায়ে ওদের শেষ সম্বল চাষের জমিটুকু হাতছাড়া হয়ে যায়। অভাবের তাড়নায় একপর্যায়ে গ্রাম ছাড়ে বাদশারা। ঠাঁই হয় ঢাকার বস্তিতে। টিকে থাকার তাগিদে বাদশা রিকশা চালানোর মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করে। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় রিকশা চালাতে চালাতেও বাদশার মন বারবার হারিয়ে যায় আকাশের গভীর নীলে। খুঁজে ফেরে স্বপ্নঘুড়ি। হঠাৎ কখনো এই নির্মম শহরের আকাশেও একঝাঁক ঘুড়ির দেখা মিলে যায়। তখনই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে।
টেলিছবিটি সম্পর্কে দীপা বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে আমাদের এখানে সেভাবে কাজ হয় না বললেই চলে। আমি সে জায়গাটাতে একটু গুরুত্ব দিতে চেয়েছি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উত্সব বাংলাদেশ। স্বপ্নঘুড়ি টেলিছবিটি সেখানে নির্বাচিত হয়েছে। টেলিছবিটি ওই উৎসবে প্রথম প্রদর্শিত হবে। তারপরই টিভি দর্শকেরা এটি দেখতে পারবেন।’
স্বপ্নঘুড়ি টেলিছবির অভিনয়শিল্পীরা হলেন—রোকেয়া প্রাচী, ঋদ্ধ অনিন্দ্য, বাকার বকুল প্রমুখ।
 
Support : Dhumketo ধূমকেতু | NewsCtg.Com | KUTUBDIA @ কুতুবদিয়া | eBlog
Copyright © 2013. Edu2News - All Rights Reserved
Template Created by Nejam Kutubi Published by Darianagar Publications
Proudly powered by Dhumketo ধূমকেতু