দাম্পত্যের তুষের অনলে জ্বলছিলেন সুনন্দা পুষ্কর। স্বামী ভারতের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ মন্ত্রী শশী ঠারুর পরকীয়ায় জড়িয়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে চলছিল তিক্ত সম্পর্ক।
এর এক পর্যায়ে রাজধানী নয়া দিল্লির এক অভিজাত হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় তার মৃতদেহ। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। তার মৃতদেহ উদ্ধার করার পর হাসপাতালে নেয়া হয় পোস্টমর্টেমের জন্য। এরপর বলা হয়েছে, সুনন্দা পুষ্করের বড় ধরনের কোন স্বাস্থ্যগত সমস্যা ছিল না। যে পুরুষকে ভালবেসে বিয়ে করে তিনি সুখের সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কিছুদিন আগে আবিষ্কার করেন তিনি অন্য নারীর প্রেমে মজেছেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। এ নিয়ে টুইটারে তিনি ফাঁস করে দেন নানা গোপন বিষয়। নয়া দিল্লির হোটেলে ৫২ বছর বয়সী সুনন্দা পুষ্কর ১৫ই জানুয়ারি একা অবস্থান করেন। পরের দিন তার সঙ্গে যোগ দেন মন্ত্রী শশী। সুনন্দা তার স্বামীর পরকীয়া সম্পর্কে তথ্য ফাঁস করে দেয়ার পরদিনই তার রহস্যময় মৃত্যু হয়। হোটেল থেকে সুনন্দার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেরালা ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা ভালমতো পরীক্ষা করে বলেন, সুনন্দার বড় কোন অসুখই ছিল না। সোমবার এ বিষয়ে মন্ত্রী শশীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে পুলিশের। এ জন্য আগে থেকেই তাকে প্রস্তুতি নিতে দু’ দিন সময় দেয়া হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, সুনন্দার মৃত্যু আকস্মিক ও অস্বাভাবিক। তার শরীরে রয়েছে ক্ষতের চিহ্ন। শনিবার লোদি রোডে সুনন্দার মৃতদেহ দাহ করা হয়। ওদিকে এর আগের এক রিপোর্টে বলা হয়, টুইটারে পাকিস্তানি সাংবাদিক মেহের তারারের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন শশী ঠারুর। বুধবার শশী ঠারুরের টুইটার একাউন্টে ইঙ্গিত দেয়া হয়, লাহোর ভিত্তিক সাংবাদিক মেহের তারারের সঙ্গে প্রণয় চলছে ৫৭ বছর বয়সী শশীর। এরপরই তিনি টুইটারে লেখেন, তার একাউন্ট হ্যাক হয়ে গেছে। মেহেরের সঙ্গে তার কোন প্রেম নেই। এর আগে একবার সুনন্দা পুষ্কর দ্য ইকোনমিক টাইমস পত্রিকাকে বলেন, শশী বা তার একাউন্ট কেউ হ্যাক করেনি, তারাই এসব বার্তা দিচ্ছেন টুইটারে। তিনি বলেছেন, লাহোর ভিত্তিক মেহের তারার যেসব ব্যক্তিগত বার্তা শশী ঠারুরকে পাঠিয়েছেন সেগুলোই তিনি পোস্ট করেছেন। টুইটারে মেহের তারার বলেছেন, টুইটারে তিনি সব সময় প্রকাশ্যে শশী ঠারুরের প্রশংসা করেছেন। তার বইয়ের পর্যালোচনা করেছেন। এ নিয়ে লুকোচুরির কিছুই নেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সুনন্দা পুষ্করকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তার স্বামী শশী ঠারুরের সঙ্গে মেহের তারারের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। এ জন্য তিনি বিচ্ছেদ চাইবেন। এনডিটিভি চ্যানেলকে সুনন্দা পুষ্কর বলেছেন, মেহের তারার তার স্বামীকে বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন শশী-সুনন্দা দম্পতি বললেন, তারা বিবাহিত, সুখী এবং এভাবেই বাকিটা সময় থাকতে চান। কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়! এখন দু’জন দু’ ভুবনের বাসিন্দা।
ওদিকে সুনন্দা পুস্কর ও শশী ঠারুরের জীবনে ঝড় তোলার অভিযোগ পাকিস্তানি যে নারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনি বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। মেহের তারার বলেছেন, শশী ঠারুর ও তার স্ত্রী সুনন্দা পুস্করের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টিতে তার কোন ভূমিকা নেই। সুনন্দা পুস্করের লাশ দিল্লির একটি অভিজাত হোটেল থেকে উদ্ধার করার পর এ বিতর্ক ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। ঠিক এমন সময় পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলকে মেহের তারার বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় ষড়যন্ত্রের শিকার। লাহোরভিত্তিক এই সাংবাদিকের বয়স ৪৫ বছর। এরই মধ্যে তিনি টুইটার একাউন্টে পাল্টে ফেলেছেন প্রোফাইল ছবি। তিনি বলেছেন, শশী ঠারুরের সঙ্গে তার দু’বার সাক্ষাত হয়েছে। একবার গত এপ্রিলে ভারতে। দ্বিতীয়বার গত জুনে দুবাইতে। তখন সেখানে অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মেহের বলেন, যখন আমি তাকে নিয়ে একটি লেখা লিখেছি, তখন অন্য মেয়ে হয়তো তা পছন্দ করবে না। সুনন্দা তার স্বামীকে অন্য জন এভাবে প্রশংসা করছে তা হয়তো সহ্য করতে পারেন নি। তাই তিনি শশীকে আমার সঙ্গে কথা বলতে বারণ করেছিলেন। তা সত্ত্বেও শশী টুইটারে আমাকে ফলো করতে থাকেন। আমি বুঝতে পারি না তার স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথা বললে বা ই মেইলে যোগাযোগ করলে তাতে তার সমস্যা আছে।
0 comments:
Post a Comment