ছেলের হাফেজ হওয়ার আশা পূরণ করতে পারল না পিতা সফিক কাজী। নিজে কাজীর করে অসচ্ছল হিসেবে জীবনযাপন করে শুধু পেটে ভাত যোগাড় হয়েছে। নিজের সন্তানদের একটু রাস্তায় তুলে দিতে চেয়েছিলেন।
সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ছেলেকে দিয়েছিলেন মাদরাসায়। বড় হয়ে কিছু করবে। নিজের ভাগ্যকে পরিবর্তন করে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন- বুকভরা আশা আর স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে গেছে হতভাগ্য পিতার ।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র রাজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কাজী সফিক। জমিজমা সামান্য। যা আছে তাতে ছোট সংসার মোটামুটি চলে যায়। চার ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় সোহাগ। বাড়ির কাছে বলে পিতা কাজী সফিক তার ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দেন খানাবাড়ি মাদরাসায়। সফলতার সঙ্গে মাদরাসা শিক্ষায় সোহাগ অষ্টম শ্রেণীতে পড়লেখা করছিল ।
মা জেলেখা বেগম বলেন, পরিবারের সবার আদরের বলে দাদা-দাদী নাম রাখেন সোহাগ। তখন থেকেই সোহাগ হয়ে যায় সবার কাছে সোহাগী। ছোটবেলা থেকেই নামাজ পড়তো এরং রোজা রাখতো। ধর্মেও যেমন কর্মেও তেমন ছিল সে। সেজন্য গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মাদরাসার সহপাঠীদের প্রিয় সোহাগ ভাই ।
সুন্দর মার্জিত চেহারার এক কিশোর সোহাগ কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে পিতার খবর তার জানা নেই। সে কারণে পিতা কাজী সফিক ও মা জেলেখা বেগমের চোখের মণি ছিল সে। মাদরাসার ক্লাসশেষে বাড়ি ফিরেই প্রতিদিন মায়ের বুকে মাথা রেখে আদর খুঁজতো। মা তাকে বুকে জড়িয়ে কপালে দিতেন চুমু। তারপর গোসল-খাওয়া সেরে ধর্মীয় ও সাধারণ শিক্ষায় মনোযোগ দেয়া। মায়ের স্বপ্ন ছিল সোহাগ বড় হয়ে তাদের সংসারের হাল ধরবেন। নিজের জীবনকে সৎ চরিত্রে গঠন করে সরকারি চাকরি করে সারাজীবন মানুষের সেবা করে যাবেন। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে সোহাগের কোন কমতি ছিল না। তাই নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে স্থান করে নেবে মানুষের মনে। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না। একটি বুলেট পিতা সফিক ও মা জেলেখা বেগমের স্বপ্ন খান খান করে দিলো। সোহাগের মা তার ছেলের মরা মুখ দেখে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, আমার সোহাগ মরেনি। মরেছি আমি। মরেছে আমার স্বপ্ন। গুলিটা যেন আমার বুক ভেদ করে আমার প্রাণটা কেড়ে নিয়েছে। সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াত-শিবির ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা ৪ পুলিশকে হত্যাসহ সংখ্যালঘুদের ঘবরাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালায়। এজন্য সুন্দরগঞ্জ থানায় অন্তত ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়। আভিযুক্ত করা হয় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে ।
সমপ্রতি ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারও সুন্দরগঞ্জে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালায়। তারা বিভিন্নস্থানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। এ ঘটনার পর গত শনিবার আসামি গ্রেপ্তার করতে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ।
অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথবাহিনীও সেনাবাহিনীর সহায়তায় আবারও ওইসব গ্রামে যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। রাতভর অভিযানের যৌথবাহিনী গুলিবর্ষণ করে। এ সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা পালিয়ে গেলেও ফাঁকে পড়ে গ্রামবাসী ও মহিলা-শিশুরা। আতঙ্কে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় খানাবাড়ি মাদরসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সোহানুর রহমান সোহাগ (১৪)। গ্রেপ্তার এড়াতে সোহাগকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহাগ মারা যায়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল সকাল থেকেই ওই এলাকায় শত শত মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। তার মা জেলেখা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে সোহাগ একজন নিষ্পাপ সন্তান। এ কিশোর বয়সেই তার প্রাণ কেড়ে নিয়ে যারা আমার স্বপ্ন খান খান করে দিয়েছে তাদের বিচার আল্লার হাতে ছেড়ে দিলাম। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় সোহাগের লাশ এসে পৌঁছায় খানাবাড়ি মাদরাসা প্রাঙ্গণে। পরে মাদরাসার পাশের মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার ভাই মাওলানা নজরুল ইসলাম জানাজা নামাজ পড়ান এবং জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র রাজবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা কাজী সফিক। জমিজমা সামান্য। যা আছে তাতে ছোট সংসার মোটামুটি চলে যায়। চার ছেলের মধ্যে দ্বিতীয় সোহাগ। বাড়ির কাছে বলে পিতা কাজী সফিক তার ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দেন খানাবাড়ি মাদরাসায়। সফলতার সঙ্গে মাদরাসা শিক্ষায় সোহাগ অষ্টম শ্রেণীতে পড়লেখা করছিল ।
মা জেলেখা বেগম বলেন, পরিবারের সবার আদরের বলে দাদা-দাদী নাম রাখেন সোহাগ। তখন থেকেই সোহাগ হয়ে যায় সবার কাছে সোহাগী। ছোটবেলা থেকেই নামাজ পড়তো এরং রোজা রাখতো। ধর্মেও যেমন কর্মেও তেমন ছিল সে। সেজন্য গ্রামের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মাদরাসার সহপাঠীদের প্রিয় সোহাগ ভাই ।
সুন্দর মার্জিত চেহারার এক কিশোর সোহাগ কোন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। তবে পিতার খবর তার জানা নেই। সে কারণে পিতা কাজী সফিক ও মা জেলেখা বেগমের চোখের মণি ছিল সে। মাদরাসার ক্লাসশেষে বাড়ি ফিরেই প্রতিদিন মায়ের বুকে মাথা রেখে আদর খুঁজতো। মা তাকে বুকে জড়িয়ে কপালে দিতেন চুমু। তারপর গোসল-খাওয়া সেরে ধর্মীয় ও সাধারণ শিক্ষায় মনোযোগ দেয়া। মায়ের স্বপ্ন ছিল সোহাগ বড় হয়ে তাদের সংসারের হাল ধরবেন। নিজের জীবনকে সৎ চরিত্রে গঠন করে সরকারি চাকরি করে সারাজীবন মানুষের সেবা করে যাবেন। মায়ের ইচ্ছা পূরণ করতে সোহাগের কোন কমতি ছিল না। তাই নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে স্থান করে নেবে মানুষের মনে। কিন্তু সে আশা আর পূরণ হলো না। একটি বুলেট পিতা সফিক ও মা জেলেখা বেগমের স্বপ্ন খান খান করে দিলো। সোহাগের মা তার ছেলের মরা মুখ দেখে হাউমাউ করে কেঁদে বলেন, আমার সোহাগ মরেনি। মরেছি আমি। মরেছে আমার স্বপ্ন। গুলিটা যেন আমার বুক ভেদ করে আমার প্রাণটা কেড়ে নিয়েছে। সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জামায়াত-শিবির ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। তারা ৪ পুলিশকে হত্যাসহ সংখ্যালঘুদের ঘবরাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালায়। এজন্য সুন্দরগঞ্জ থানায় অন্তত ৩২টি মামলা দায়ের করা হয়। আভিযুক্ত করা হয় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি কর্মীসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে ।
সমপ্রতি ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আবারও সুন্দরগঞ্জে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব চালায়। তারা বিভিন্নস্থানে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটায়। এ ঘটনার পর গত শনিবার আসামি গ্রেপ্তার করতে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ।
অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যৌথবাহিনীও সেনাবাহিনীর সহায়তায় আবারও ওইসব গ্রামে যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। রাতভর অভিযানের যৌথবাহিনী গুলিবর্ষণ করে। এ সময় জামায়াত-শিবির কর্মীরা পালিয়ে গেলেও ফাঁকে পড়ে গ্রামবাসী ও মহিলা-শিশুরা। আতঙ্কে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয় খানাবাড়ি মাদরসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সোহানুর রহমান সোহাগ (১৪)। গ্রেপ্তার এড়াতে সোহাগকে আশঙ্কা জনক অবস্থায় বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোহাগ মারা যায়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গতকাল সকাল থেকেই ওই এলাকায় শত শত মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। তার মা জেলেখা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তার ছেলে সোহাগ একজন নিষ্পাপ সন্তান। এ কিশোর বয়সেই তার প্রাণ কেড়ে নিয়ে যারা আমার স্বপ্ন খান খান করে দিয়েছে তাদের বিচার আল্লার হাতে ছেড়ে দিলাম। গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় সোহাগের লাশ এসে পৌঁছায় খানাবাড়ি মাদরাসা প্রাঙ্গণে। পরে মাদরাসার পাশের মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার ভাই মাওলানা নজরুল ইসলাম জানাজা নামাজ পড়ান এবং জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
0 comments:
Post a Comment